বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলীকে ফের দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ

সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামী
সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামী

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামীকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সকাল ১০টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

দুদক সূত্র প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, বেবিচকের বিভিন্ন টেন্ডারে সিন্ডিকেট করে পছন্দের ঠিকাদারকে কার্যাদেশ প্রদানসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য পরিচালক মো. ফরিদুর রহমানকে দলনেতা ও সহকারী পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধানকে সদস্য করে দুই সদস্যের একটি দল গঠন করেছে সংস্থাটি। অনুসন্ধান দলের সদস্যরাই তাঁকে আজ জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৬ আগস্ট সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামীকে তলব করে চিঠি পাঠানো হয়।

এর আগে গত ১২ জুন দুর্নীতির আরেক অভিযোগে তাঁকে পাঁচ ঘণ্টা দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরিচালক ফরিদুর রহমান ও দুই সহকারী পরিচালক আ. সালাম আলী মোল্লা ও খায়রুল হক তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। দুদক সূত্র জানায়, দুর্নীতির দুটি অভিযোগ নিয়ে আলাদা আলাদাভাবে অনুসন্ধান করছেন সংস্থার দুই সহকারী পরিচালক মো. খায়রুল হক ও মো. আ. সালাম আলী মোল্লা।

সূত্র আরও জানায়, ৪ জুন আ. সালাম আলী মোল্লা ও খায়রুল হকের পাঠানো আলাদা আলাদা নোটিশে বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলীকে দুদকে তলব করা হয়। নোটিশে তাঁকে ১০ ও ১২ জুন সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়।

১০ জুন সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামী দুদকে হাজির হননি। দুদক সূত্র জানায়, বেবিচকের চেয়ারম্যানের পাঠানো এক চিঠিতে প্রধান প্রকৌশলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঈদের পর সময় দিতে অনুরোধ করা হয়। ওই চিঠিতে বলা হয়, মন্ত্রণালয়ে জরুরি বৈঠকের কারণে তিনি দুদকে হাজির হতে পারছেন না।

বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মো. খায়রুল হকের দেওয়া নোটিশে অভিযোগের বিষয়ে বলা হয়, সিভিল অ্যাভিয়েশনের মেইনটেন্যান্স, কনস্ট্রাকশন, কেনাকাটা ও ফান্ড ম্যানেজমেন্টে সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষের শত শত কোটি টাকার অনিয়ম, দুর্নীতি, আত্মসাৎ ও সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বাড়ি-গাড়িসহ অঢেল অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।

এ বিষয়ে সুধেন্দু বিকাশকে ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বেবিচকে কী কী প্রকল্পের কাজ হয়েছে, তার তালিকাসহ বিভিন্ন খাতের ব্যয়ের নথি এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরের সব ধরনের নিরীক্ষা প্রতিবেদনসহ দুদকে হাজির থাকতে বলা হয়।

মো. আ. সালাম আলী মোল্লার দেওয়া নোটিশে অভিযোগের বিষয়ে বলা হয়, বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলী ও অন্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে বক্তব্য দেওয়ার জন্য তাঁকে দুদকে আসতে বলা হয়েছে।

এর আগে গত বছরের ১৯ অক্টোবর ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। ওই সময় অভিযোগ ছিল, নয়টি প্রতিষ্ঠান বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের প্রকৌশলীকে নির্দিষ্ট হারে ঘুষ দিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।