ভর্তুকির টাকা হাতাতে মুড়ি-বিস্কুট রপ্তানিতে জালিয়াতি

ছবি: সংগৃহীত

নথিপত্রে এক লাখ তিন হাজার ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি করার কথা ছিল। তবে বাস্তবে পাওয়া গেছে মাত্র পাঁচ হাজার ডলারের পণ্য। অভিযোগ উঠেছে, সরকার কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানিতে যে নগদ সুবিধা দেয়, তা হাতিয়ে নিতেই এমন জালিয়াতি।

আজ বুধবার চট্টগ্রাম কাস্টম কর্মকর্তারা এই জালিয়াতির ঘটনা ধরে ফেলেন। দেখা যায়, ৯৮ হাজার ডলারের পণ্য রপ্তানি না করে নগদ সহায়তা নেওয়ার ফাঁদ পেতেছিল রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বাংলা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড। নথিপত্রে প্রতিষ্ঠানটির ঠিকানা হিসেবে ঢাকার মতিঝিলের কথা বলা হয়েছে।

কাস্টম কর্মকর্তারা বলছেন, জালিয়াতি শনাক্ত হওয়া দুই চালানের রপ্তানি ঠেকানোর মাধ্যমে সরকারের অন্তত ১৯ হাজার ডলার বা ১৬ লাখ টাকা রক্ষা করা গেছে। চালান ২টি প্রতিষ্ঠানটির মোট ১০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানির প্রথম চালান। শুরুতেই জালিয়াতি শনাক্ত হওয়ায় কার্যত ১ কোটি ৭০ লাখ টাকার ক্ষতি থেকে রক্ষা পেয়েছে সরকার।

কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানিতে সরকার রপ্তানি মূল্যের ২০ শতাংশ নগদ ভর্তুকি দেয় রপ্তানিকারকদের। মূলত এ সুবিধা কাজে লাগিয়ে সরকারের তহবিল থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল বাংলা ফুড। এর আগে একই প্রতিষ্ঠান ২৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা মূল্যের পণ্য রপ্তানি করে।

রপ্তানির নথিপত্রে চালান দুটিতে মুড়ি, বিস্কুট, মসলাসহ প্রায় ২২ টন পণ্য রপ্তানির কথা ছিল। জালিয়াতির বিষয়টি সহজে যাতে কেউ বুঝতে না পারে, সে জন্য কনটেইনারের দরজার মুখে বাক্সগুলো সাজিয়ে রাখা হয়েছিল।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের সহকারী কমিশনার রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, জালিয়াতি ধরা পড়ায় প্রতিষ্ঠানটি এখন নগদ প্রণোদনা নেওয়ার সুযোগ পাবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। আগে যেসব চালান রপ্তানি হয়েছে, সেগুলোও এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

জালিয়াতির বিষয়টি সহজে যাতে কেউ বুঝতে না পারে, সে জন্য কনটেইনারের দরজার মুখে বাক্সগুলো সাজিয়ে রাখা হয়েছিল
ছবি: সংগৃহীত

বাংলা ফুড দুটি কনটেইনারে পৃথক চালানে মালয়েশিয়ার একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে পণ্য রপ্তানির চেষ্টা করেছিল। রপ্তানি প্রক্রিয়া শেষে বন্দরে নেওয়ার আগে চট্টগ্রাম কাস্টম কমিশনার ফখরুল আলমের কাছে চালানটি নিয়ে সন্দেহের তথ্য আসে। এরপরই তাঁর নির্দেশে কাস্টমসের অডিট, রিসার্চ ও ইনভেস্টিগেশন দল কনটেইনার দুটি খুলে ঘটনার সত্যতা পায়।

রপ্তানির নথিপত্রে চালান দুটিতে মুড়ি, বিস্কুট, মসলাসহ প্রায় ২২ টন পণ্য রপ্তানির কথা ছিল। জালিয়াতির বিষয়টি সহজে যাতে কেউ বুঝতে না পারে, সে জন্য কনটেইনারের দরজার মুখে বাক্সগুলো সাজিয়ে রাখা হয়েছিল।

রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। রপ্তানিকারকের প্রতিনিধি আর ইসলাম এজেন্সির কর্ণধার রফিকুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন না ধরায় তাঁর মতামত জানা যায়নি।