ভাবির দুর্ব্যবহারে ক্ষুব্ধ হয়ে এই নৃশংসতা

সিআইডি বলছে, টাকার জন্য রায়হানুরের ভাবি প্রায়ই তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করতেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে চারজনকে গলা কেটে হত্যা করেন তিনি

বেকারত্বের কারণে স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় রায়হানুর ইসলামের (৩৬)। বিবাহবিচ্ছেদের পর থেকে রায়হানুর থাকছিলেন ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে। কিন্তু টাকার জন্য রায়হানুরের ভাবি প্রায়ই তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করতেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ভাই, ভাবি ও তাঁদের দুই সন্তানকে গলা কেটে হত্যা করেন রায়হানুর। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর মালিবাগে প্রধান কার্যালয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) শেখ ওমর ফারুক বলেন, গত ১৫ অক্টোবর সাতক্ষীরার কলারোয়ায় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত রায়হানুরকে ২১ অক্টোবর গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই দিনই রায়হানুর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ২২ নভেম্বর আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

শেখ ওমর ফারুক বলেন, রায়হানুর তাঁর ভাই শাহিনুর রহমান, শাহিনুরের স্ত্রী সাবিনা খাতুন, মেয়ে তাসনিম ও ছেলে সিয়ামকে হত্যা করেছেন। এ ঘটনায় নিহত সাবিনার মা বাদী হয়ে কলারোয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলাটির তদন্তভার পায় সিআইডি। অভিযুক্ত রায়হানুর ফেনসিডিল সেবন করতেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ফেনসিডিলের সঙ্গে ঘুমের ওষুধও সেবন করতেন।

এর আগে ফেনসিডিলসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে কারাগারে যেতে হয়েছিল তাঁকে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে রায়হানুরের সঙ্গে স্ত্রীর বিচ্ছেদ হয়। এরপর বেকার অবস্থায় ভাই ও ভাবির সংসারে অবস্থান করেন তিনি। ভাবি সাবিনা খাতুন মাঝেমধ্যে টাকা দাবি করে রায়হানুরের সঙ্গ খারাপ আচরণ করতেন। স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ, বেকার জীবন, ভাইয়ের পরিবারে ভাবির দুর্ব্যবহারের কারণে ভাই, ভাবিসহ তাঁর পরিবারকে হত্যার পরিকল্পনা করেন রায়হানুর।

সিআইডি জানায়, ঘটনার দিন দুটি কোমল পানীয়র সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে ভাই, ভাবি ও তাঁদের দুই সন্তানকে খাওয়ান রায়হানুর। তাঁরা ঘুমিয়ে পড়লে ১৫ অক্টোবর দিবাগত রাত তিনটা থেকে সাড়ে তিনটার মধ্যে চাপাতি দিয়ে ভাই, ভাবি ও তাঁদের দুই সন্তানকে গলা কেটে হত্যা করেন রায়হানুর।

সিআইডি কর্মকর্তা ওমর ফারুক আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর রায়হানুর হত্যার আলামত মুছে ফেলার চেষ্টা চালান। গ্রেপ্তারের পর সিআইডি রায়হানুরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী উদ্ধার করা হয় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতি ও রক্তমাখা কাপড়।