ভারতীয় জাল রুপি তৈরির কারখানা ঢাকার রামপুরায়

রাজধানী ঢাকার রামপুরা এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ২১ লাখ জাল রুপির নোটসহ চক্রটির তিন সদস্যকে সোমবার গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানী ঢাকার রামপুরা এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ২১ লাখ জাল রুপির নোটসহ চক্রটির তিন সদস্যকে সোমবার গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা। ছবি: সংগৃহীত

চকচকে নতুন সব নোট। বাংলাদেশি কোনো টাকার নোট নয়, সবই ভারতীয় রুপি। নিখুঁত এর কারুকাজ। খালি চোখে দেখলে বোঝার উপায় নেই যে, এগুলো ভারতীয় জাল রুপির নোট। এসব জাল নোট তৈরির করা হতো রাজধানী ঢাকার রামপুরা এলাকার একটি বাড়িতে। রীতিমতো কারখানা করে এখানে জাল রুপি তৈরি করত একটি চক্র।

এই কারখানা থেকে ২১ লাখ জাল রুপির নোটসহ চক্রটির তিন সদস্যকে আজ সোমবার গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) উত্তর বিভাগের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও প্রতিরোধ টিম। গ্রেপ্তার তিনজন হলেন রফিকুল ইসলাম খসরু, মো. আব্দুর রহিম ও জনি ডি কস্তা। এদের কাছ থেকে পাওয়া ২১ লাখ রুপির সবই ৫০০ ও ২০০০ রুটির নোট। এ ছাড়া ঘটনাস্থল থেকে জাল রুপি তৈরির কাজে ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ, একটি কালার প্রিন্টার, একটি লেমিনেটিং মেশিন, জাল রুপি তৈরির বিপুল পরিমাণ কাগজ, প্রিন্টারে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের কালি, সিকিউরিটি সিল সংবলিত স্ক্রিন বোর্ড, গাম ও জাল রুপি তৈরির জন্য ব্যবহৃত সিল মারা ফয়েল পেপার উদ্ধার করা হয়।

ডিবির উপকমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান বলেন, গত ৯ জুলাই রামপুরার উলন রোডের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে জাল বাংলাদেশি টাকা তৈরির একটি কারখানার সন্ধান পাওয়া যায়। সেখানে উদ্ধার হওয়া ভারতীয় রুপি তৈরিতে ব্যবহৃত বিশেষ ফয়েল পেপারের সূত্র ধরে জাল ভারতীয় রুপি তৈরির কারখানাটির সন্ধান পায় ডিবি। রামপুরার পলাশবাগ মোড়ের একটি আবাসিক ভবনের অষ্টম তলার একটি ফ্ল্যাটে কারখানাটি ছিল। সেখানে আজ সকালে অভিযান চালিয়ে ২১ লাখ জাল রুপির নোটসহ এই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিসি মশিউর রহমান জানান, আসন্ন কোরবানি ঈদ উপলক্ষে ভারত থেকে পোশাক ও কোরবানির গরু আমদানি করা হয়ে থাকে। তাই চক্রটি জাল রুপি তৈরি করে সীমান্ত এলাকায় পাচারের চেষ্টা করছিল।

ডিবি সূত্রে জানা যায়, জালিয়াত চক্রটির নেতৃত্ব রয়েছেন রফিকুল ইসলাম খসরু। ঢাকায় জাল রুপির নোট তৈরি করে সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ, যশোরের আগ্রহী অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহের দায়িত্ব ছিল তাঁর। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানান, প্রথম দিকে আসল ভারতীয় রুপির নোটের সঙ্গে এই চক্রের তৈরি করা জাল রুপির নোটে কিছুটা পার্থক্য ধরা পড়ে। তাই জাল নোটের চালান আবারও ফেরত আসে। পরে আরও নিখুঁত ও সূক্ষ্মভাবে রামপুরার কারখানাটিতে জাল রুপির নোট তৈরি শুরু করেন। এই কারখানায় নোট তৈরি করতেন আবদুর রহিম ও রনি ডি কস্তা। গ্রেপ্তার তিনজনের বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় জাল নোট তৈরির অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগ করে জামিনে বের হয়ে তারা আবারও নোট জালিয়াতি শুরু করেন।