মাউশির নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, গ্রেপ্তার ১

সুমন জোয়াদ্দার
ছবি: সংগৃহীত

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)-এর অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর নাম সুমন জোয়াদ্দার (৩০)। তাঁর প্রবেশপত্রের পেছনে ৭০ নম্বরের উত্তর লেখা ছিল।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজ কেন্দ্র পরীক্ষা চলাকালে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) তেজগাঁও বিভাগ। আজ শনিবার তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিবি) ওয়াহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান। তিনি জানান, কেন্দ্রে নেওয়ার পথে অথবা কেন্দ্রে পৌঁছার পর প্রশ্নপত্র ফাঁস করা হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত আরও দুজনের নাম পাওয়া গেছে।

ডিবি বলছে, পরীক্ষা শুরুর আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। গ্রেপ্তার সুমন বাইরে থেকে প্রবেশপত্রের পেছনে ৭০ নম্বরের প্রশ্নের সমাধান লিখে নিয়ে যান। প্রবেশপত্র দেখে পরীক্ষা দেওয়ার সময় এক শিক্ষকের সন্দেহ হয়। কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকেরা যাচাই-বাচাই করে দেখেন, তাঁর প্রবেশপত্রে প্রশ্নের উত্তর ছোট ছোট করে লেখা রয়েছে। পরে তাঁকে আটক করা হয়।

ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় লালবাগ থানায় মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তার করতে কয়েকটি স্থানে অভিযান চলছে।

ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষক আবদুল খালেক বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে পরীক্ষা শুরু হয় বেলা ৩টায়। তবে পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে সুমন জোয়াদ্দার জানান, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বেলা ২টা ১৮ মিনিটে তাঁর মোবাইলে পটুয়াখালীর সাইফুল ও টাঙ্গাইলের খোকন উত্তরপত্র পাঠান।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে ঢাকার ৬১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হয়। ৫১৩টি পদের জন্য পরীক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখ ৮৩ হাজার।

গত ২১ জানুয়ারি প্রতিরক্ষা মহাহিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয়ের অধীন ‘অডিটর’ নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় রাজধানী থেকে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা পরিষদের বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবা নাসরিনসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গত বছরের নভেম্বরে রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় বুয়েটের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান নিখিল রঞ্জন ধরের নাম আসে পুলিশের তদন্তে। এরপর বুয়েট কর্তৃপক্ষ তাঁকে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়। পাশাপাশি তাঁকে কোনো পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন না করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের আরেকটি ঘটনায় বরখাস্ত হওয়া দুই ব্যাংক কর্মকর্তা ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক এক কর্মকর্তার ব্যাংক হিসাবে গত বছর ছয় কোটি টাকা পায় সিআইডি। আর ভর্তি পরীক্ষার (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ছাত্রলীগের ২১ নেতা-কর্মীসহ ১২৫ জনের বিচার গত বছর শুরু হয়েছে।