মাদক মামলার অপরাধীকে লাগাতে হবে গাছ, করতে হবে ভালো ব্যবহার

প্রতীকী ছবি

মাগুরায় মাদক মামলায় আরও একটি ব্যতিক্রমী রায় দিয়েছেন আদালত। দোষী সাব্যস্ত আসামিকে কারাভোগ করতে হবে না। এর বদলে একজন প্রবেশন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে এক বছর সময়কালে ১০টি গাছ লাগাতে হবে। ভালো ব্যবহার করার পাশাপাশি মানতে হবে কিছু শর্ত। বুধবার বিকেলে মাগুরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াউর রহমান এ রায় দেন।
মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকার দায়ে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তির নাম মাসুদ মোল্যা (২২)। আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল মাগুরার শালিখা উপজেলার আড়পাড়ার জামাল মোল্যার ছেলে মাসুদকে মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে আটক করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ আমির আলি মানিক বলেন, যাবতীয় সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপনের পর আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। তাঁর ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড হওয়ার কথা। কারাগারে শাস্তি ভোগের পরিবর্তে আসামিকে এক বছরের জন্য জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন কর্মকর্তার হেফাজতে দেওয়া হয়েছে। এ সময় তিনি বাড়িতে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে থাকবেন। পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীল হিসেবে পাঁচটি বনজ ও পাঁচটি ফলজ বৃক্ষরোপণ করতে হবে তাঁকে।
মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী অনিক হোসেন বলেন, আসামির বয়স কম। অল্প বয়সে তিনি মাদক সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু তাঁর আগে কোনো অপরাধের রেকর্ড নেই। ফলে তিনি অপরাধী হলেও তাঁকে শাস্তি হিসেবে কারাগারে পাঠালে সম্ভাবনাময় একটি জীবন ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই রায়ে আসামি ভালো পথে ফিরে আসার সুযোগ পেয়েছেন।

মাগুরা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন কর্মকর্তা মেহেতাজ আরা সালমা বলেন, প্রবেশনকালে মাসুদকে শুধু গাছ লাগালেই হবে না। এ সময় তাঁকে শান্তি বজায় রাখতে হবে। সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। নতুন করে কোনো ধরনের মাদক সেবন করতে পারবেন না তিনি। তাঁকে খারাপ সঙ্গ ছাড়তে হবে। এক বছরের মধ্যে যদি তিনি এসব শর্ত ভঙ্গ করেন, তাহলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ছয় মাসের কারাদণ্ড ভোগের পাশাপাশি এক হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।
মাগুরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত এক বছরে মাদক ও পারিবারিক বিরোধের দুটি মামলায় এমন দুটি রায় দেওয়া হয়েছিল।