‘মিথ্যা’ মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে

নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি শাহরিয়ার রেজা ও তাঁর বাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ তুলে বিচারের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছে একটি পরিবার।

গতকাল রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে তিন সন্তানসহ ওই পরিবার মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লার সস্তাপুর এলাকার রিকশা গ্যারেজের মালিক শফি প্রধান (৬৮), তাঁর স্ত্রী মেহেরুন নেসা (৬০), তিন ছেলে মাহবুব প্রধান, বাদল প্রধান ও মাসুদ প্রধান।

গ্যারেজমালিক শফি প্রধান বলেন, সস্তাপুর এলাকায় তাঁর গ্যারেজের সামনে রাস্তায় এক চালক রিকশা রেখে গ্যারেজে আসেন। রাস্তায় রিকশা রাখায় ছাত্রলীগের নেতা শাহরিয়ার রেজার চাচা মজিবুর, জুয়েল ও তাঁদের বাহিনীর লোকজন তাঁকে (শফি) ধরে নিয়ে মারধর করেন। তাঁর তিন সন্তান বাঁচাতে এলে তাঁদেরও মারধর করেন শাহরিয়ার, তাঁর চাচা মজিবরসহ অন্যরা। তাঁদের দায়ের কোপে তাঁর (শফি) এক আত্মীয় সজলের একটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং আরও একজনকে কুপিয়ে রেখে তাঁরা চলে যান। এ ঘটনায় তাঁর ছেলে বাদল বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় শাহরিয়ার রেজার চাচা জুয়েল ও তাঁদের বাহিনীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় পুলিশ অভিযোগপত্র দিয়েছে।

শফি প্রধান বলেন, ‘ওগো চাপে মামলা তুলি নাই দেইখ্যা ওরা নানাভাবে অত্যাচার, মারধর ও মামলা দিয়ে এলাকার ছাড়া হুমকি দিচ্ছে।’

শফি প্রধান আরও বলেন, শাহরিয়ার রেজার প্রশ্রয়ে তাঁর চাচা মজিবুর ও জুয়েল এলাকায় সাধারণ মানুষদের অনেক অত্যাচার করেন। সস্তাপুরে অনেক পরিবারকে তাঁরা বাসা থেকে বের করে দিয়ে ঘরে তালা দিয়েছেন। সাইনবোর্ড লাগিয়ে বাড়িঘর দখল করেছেন। তিনি বলেন, ‘তাঁরা অনেক প্রভাবশালী, তাঁদের সঙ্গে আমাদের কোনো তুলনা হয় না। আমরা খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষ। তাঁদের আক্রোশ থেকে রক্ষা পেতেই জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছি।’

শফি প্রধানের স্ত্রী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমরা হতদরিদ্র, আমাদের ক্ষমতা নেই মামলা চালানোর। চুরি ও নারী নির্যাতনের মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আমার ছেলে ফেরি করে কাপড় বিক্রি করে সংসার চালায়। আমি পরিবার নিয়ে শান্তিতে থাকতে চাই। আমি মিথ্যা মামলার হয়রানি বন্ধ চাই।’

অভিযোগের বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি শাহরিয়ার রেজা প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত বছরের ডিসেম্বরে মারধরের ঘটনা ঘটে। ওই মামলা চলমান। ওরা আমার কাছে এসেছিল, আমি ওদের মামলা মীমাংসা করতে বলেছি। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে আমি জানি না, আমার চাচা বলতে পারবেন।’

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।