রাজীবপুরে পঞ্চম শ্রেণির শিশু ধর্ষণের শিকার

কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত রোববার এ ঘটনা ঘটলেও ধর্ষণকারীর পক্ষের লোকজনের বাধা ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের সালিসের আশ্বাসে শিশুটিকে সোমবার রাতে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বর্তমানে শিশুটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি এবং পুলিশের কাছে অভিযোগ করায় ধর্ষণকারী তরুণের লোকজন ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
নির্যাতিত শিশুটির পরিবারের সদস্য সূত্র জানায়, রোববার বিকেলে বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফিরছিল শিশুটি। পথে মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের মদনপাড়া গ্রামের শাহজাহান মিয়া (২১) শিশুটিকে টেনে একটি ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে। তখন বাড়িতে কেউ ছিল না। পরে শিশুটির চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে শাহজাহান পালিয়ে যায়।
শিশুটির দিনমজুর বাবা অভিযোগ করেন, ‘গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থে এহানে বাড়ি করছি। এহানে আপন বলতে কেউ নাই। এই ঘটনায় চেয়ারম্যান ও হের লোকজন আমারে কয়, এ নিয়া কোথাও যাওনের দরকার নাই। হেরাই বিচার করে দিব। আইতে মাইয়া আমার খালি কাইন্দা কাইন্দা ওঠে। সকালে হাসপাতালে নিওনের সময় শাহজাহানের বাড়ির লোকজন বাধা দেয়। পরে সন্ধ্যায় অসুস্থ মাইয়াক নিয়া আমি পালায় হাসপাতালে আইছি। গত মঙ্গলবার সকালে থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ অভিযোগ না নিয়ে ফেরত পাঠাই দিছে। কইছে, চেয়ারম্যানের কাছে যাও। বিচার কইরা দিব।’
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ধর্ষণ হয়েছে কি না আমি সঠিক বলতে পারছি না। তবে দুই পরিবারের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ হয়েছে বলে জানি। এ জন্য ওই ঘটনা স্থানীয়ভাবে মীমাংসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু মেয়ের বাবা আমাদের কথা না শুনে হাসপাতালে গেছে।’
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আবদুল মাবুদের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাসপাতালটির একমাত্র চিকিৎসা কর্মকর্তা আবদুল মাবুদ। শিশুটি যে বিদ্যালয়ের ছাত্রী সেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মোতালেব বলেন, এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে স্কুলে আসাই শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে। কারণ শাহজাহান এর আগেও অনেক শিশুর সঙ্গে যৌন হয়রানিমূলক আচরণ ও বখাটেপনা করেছে। এ নিয়ে গ্রামে বিচার-সালিসও হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ঢুষমারা জলথানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজনুর রহমান বলেন, ‘আমি ঘটনাটি স্থানীয় মেম্বারের কাছে শুনেছি। তবে কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি।’