রায়হানকে পুলিশ ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া এএসআই গ্রেপ্তার

এএসআই আশেক এলাহি
সংগৃহীত

সিলেটে পুলিশ হেফাজতে নিহত মো. রায়হান আহমদকে (৩৪) বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বুধবার রাতে তাঁকে মহানগর পুলিশ লাইনস থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। নির্যাতনের ঘটনার পরপরই ফাঁড়ি থেকে তাঁকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল।

যোগাযোগ করলে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ-উজ-জামান প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, এএসআই আশেক এলাহিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করবেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

পিবিআই সূত্র জানায়, এএসআই আশেক এলাহি গত ১০ অক্টোবর রাত তিনটার দিকে রায়হানকে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়েছিলেন। ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান নিহত হলে পরবর্তীতে নগর পুলিশের অনুসন্ধান কমিটির তদন্তে আশেককে বন্দরবাজার ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল। এ নিয়ে হেফাজতে মৃত্যুর মামলায় মোট গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিনজন পুলিশ সদস্যকে। এর মধ্যে দুজন সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কনস্টেবল। এ ছাড়া ছিনতাইয়ের অভিযোগ তোলা সাইদুর শেখ নামের এক ব্যক্তিকে মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পিবিআই জানায়, কথিত ছিনতাইয়ের অভিযোগে রায়হানকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে তুলে এনেছিলেন এএসআই আশেক এলাহি। এ বিষয়টি ঘটনার রাতে ফাঁড়িতে থাকা তিনজন কনস্টেবল আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেছেন। রায়হানকে তুলে এনে ফাঁড়িতে নির্যাতন করার সময় আশেক সেখানে ছিলেন এবং রায়হানকে তুলে আনার সময়ও ছিলেন তিনি।

সিলেট নগরীর আখালিয়া নিহারিপাড়ার বাসিন্দা রায়হানকে ১০ অক্টোবর রাতে সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। পরের দিন রায়হান মারা যান। এ ঘটনায় হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা হলে নগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে সত্যতা পায়। ১২ অক্টোবর ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁঞাসহ চারজনকে বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। ১৩ অক্টোবর আকরব পুলিশি হেফাজত থেকে পালিয়ে গা-ঢাকা দেন আকবর।

নগর পুলিশ সূত্র জানায়, আকবরের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তদন্ত করে পুলিশের সদর দপ্তরের তিন সদস্যের একটি কমিটি। আকবরকে পালাতে সহায়তা করার অভিযোগে ফাঁড়ির 'টুইআইসি' পদে থাকা এসআই হাসান উদ্দিনকে ২১ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। আকবরের পলায়নে সমালোচনার মুখে সরানো হয় পুলিশ কমিশনার পদে থাকা গোলাম কিবরিয়াকে। তাঁর জায়গায় পুলিশের স্পেশাল প্রোটেকশন ব্যাটালিয়নের (এসপিবিএন) ডিআইজি পদে থাকা মো. নিশারুল আরিফকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। মঙ্গলবার রাতে তিনি সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনারের দায়িত্ব নিয়েছেন।