রেশন কার্ড নিয়ে দুই ইউপি সদস্য গ্রুপের সংঘর্ষ, ভাঙচুর

করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ খাদ্য কর্মসূচির কার্ডের ভাগাভাগি নিয়ে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় দুই ইউপি সদস্য গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করা হয়। আহত হয় অন্তত ১০ জন।

আজ বুধবার দুপুরে উপজেলার গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের গোয়ালভাওড় বাজারে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

জানা গেছে, লকডাউন পরিস্থিতির কারণে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের ভুক্তভোগী লোকজনের জন্য বিশেষ রেশন কার্ডের ব্যবস্থা করা হয়। সেই অনুযায়ী ফরিদগঞ্জে পৌরসভা ও ১৫টি ইউনিয়নের মোট ১১ হাজার ৩০০ কার্ডের বিপরীতে কার্ডপ্রতি ২০ কেজি চাল বরাদ্দ করা হয়।

গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের সচিব আব্দুল মান্নান জানান, তাঁর ইউনিয়নে বিশেষ রেশন কার্ডের ৭৪৬টি কার্ড বরাদ্দ হয়। গতকাল মঙ্গলবার ইউনিয়ন পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ইউনিয়নে বরাদ্দকৃত কার্ডের মধ্যে ৪০ শতাংশ ইউনিয়ন পরিষদের জন্য রেখে বাকি ৬০ ভাগের মধ্যে স্থানীয় সাংসদের প্রতিনিধির ৩০ শতাংশ, উপজেলা চেয়ারম্যানের প্রতিনিধির ২০ শতাংশ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের জন্য ১০ শতাংশ করে কার্ড বরাদ্দের সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ১০ শতাংশ কার্ড নিয়ে দুই ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন ও টেলু পাটওয়ারীর মধ্যে হাতাহাতি হয়। স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, তাঁদের মধ্যে টেলু পাটওয়ারী বর্তমান সাংসদ গ্রুপের ও আলমগীর হোসেন উপজেলা চেয়ারম্যান গ্রুপের অনুসারী।

স্থানীয় ব্যক্তিরা জানায়, এরই জের ধরে আজ দুপুরে দুই গ্রুপ প্রস্তুতি নিয়ে গোয়ালভাওড় বাজারে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে কথা–কাটাকাটির জের ধরে পাল্টাপাল্টি হামলা শুরু হয়। উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে গোয়ালভাওড় বাজারকে রণক্ষেত্রে পরিণত করে। এতে উভয় পক্ষের তারেক (২৮), রুবেল (২৬), রাসেল (২৪), মজিব (৪০), সোহাগসহ (২২) অন্তত ১০ জন আহত হন।

এ হামলায় একটি পক্ষ বাজারের নাহিদ ডিপার্টমেন্ট স্টোরসহ কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করে। নাহিদ ডিপার্টমেন্ট স্টোরের মালিক সোহেল জানান, বাজারের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে একটি পক্ষ তাঁদের দোকানে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এ সময় তাঁর ভাই জুয়েল হোসেনকে বেদম মারধর করা হয়। একই সঙ্গে তারা নাছির নামের আরেক ব্যবসায়ীর দোকান ভাঙচুর করে।

এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন জানান, আজ দুপুরে তাঁকে সাংসদ গ্রুপের লোকজন বেদম মারধর করে। তাঁর বাড়িঘরে হামলা চালায়।

অপর ইউপি সদস্য টেলু পাটওয়ারী জানান, গতকাল তাঁর ওপর হামলার ঘটনায় আজ দুপুরে বিচার হওয়ার কথা। উভয় পক্ষ ইউনিয়ন পরিষদে অবস্থান নেয়। এরপর উভয় গ্রুপ মারামারি শুরু করে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান জানান, কার্ড ভাগাভাগি নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।

ফরিদগঞ্জ থানার ওসি আব্দুর রকিব জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশের গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে কোনো মামলা হয়নি।