লাশ নড়ে ওঠার গুজব, হাসপাতালে ভাঙচুর

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত এক নির্মাণশ্রমিককে হাসপাতালে আনা হলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। কিন্তু বাড়িতে নেওয়ার পর গুজব ছড়ায়, লাশটি নড়ে উঠেছে। এরপর মৃত ব্যক্তির উত্তেজিত স্বজন ও সহকর্মীরা হাসপাতালে গিয়ে ভাঙচুর করেন। মেহেরপুরে গতকাল বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটেছে।

ওই ব্যক্তির নাম হাবিবুর রহমান (২৬)। তিনি শহরের চক্রপাড়ার হেরফত আলীর ছেলে। পেশায় নির্মাণশ্রমিক ছিলেন তিনি।

স্বজন ও সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল সকাল আটটার দিকে হাবিবুর রহমান শহরের এশিয়ানেট মোড়ে একটি ভবন নির্মাণের কাজে যোগ দেন। সেখানে পাম্প দিয়ে পানি তুলতে গিয়ে তিনি বিদ্যুতের সংস্পর্শে এসে মারাত্মক আহত হন। দ্রুত তাঁকে নেওয়া হয় মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, সকাল সাড়ে আটটার দিকে হাসপাতালে আনা হলে হাবিবুরের ইসিজি পরীক্ষা করানো হয়। পরীক্ষার প্রতিবেদন দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক লিপু সুলতান তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর লাশ বাড়ি নিয়ে যান স্বজন ও সহকর্মীরা। তখন গুজব ছড়ায়, লাশ নড়াচড়া করেছে। সকাল ১০টার দিকে হাবিবুরকে আবারও হাসপাতালে আনা হয়। এ সময় উত্তেজিত স্বজন ও সহকর্মীরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কক্ষের চেয়ার-টেবিলসহ আসবাব ভাঙচুর করেন। পরে আবারও হাবিবুরের ইসিজি করানো হয়। পরীক্ষার প্রতিবেদন দেখে হাবিবুরকে মৃত ঘোষণা করেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মিজানুর রহমান।

হাসপাতালের একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ইসিজি প্রতিবেদনে দুবারই হাবিবুরের হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ পাওয়া যায়। কিন্তু বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া ব্যক্তিদের দেহের সংকুচিত হওয়া পেশিগুলো হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়ার পরও প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে প্রসারিত হতে পারে। তা দেখে হয়তো স্বজন ও সহকর্মীরা মনে করেছিলেন, হাবিবুর বেঁচে আছেন।

এদিকে হাসপাতালে ভাঙচুরের প্রতিবাদে চিকিৎসকেরা তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে নিরাপদ স্থানে চলে যান। এতে প্রায় এক ঘণ্টা চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হয়।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মিজানুর রহমান বলেন, মৃত হাবিবুর রহমানের স্বজন ও সহকর্মীরা ভুল বুঝে হাসপাতালে ভাঙচুর করেছেন। বিষয়টি নিয়ে জরুরি সভা করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সভায় ভাঙচুরের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।