লোভে পড়ে প্রতারণার শিকার সাবেক শিক্ষা কর্মকর্তা

মুঠোফোনে প্রতারক চক্রের মোটা অঙ্কের টাকার প্রলোভনে পড়ে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার সাবেক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনার কলি নাজনীন (৪০) তিন লক্ষাধিক টাকা খুইয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার মোহনগঞ্জ উপজেলা পরিষদের খাদ্যগুদাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শিক্ষা কর্মকর্তা আনার কলি দুদিন আগে মোহনগঞ্জ থেকে বদলি হয়ে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় যোগ দেন। গতকাল সকালে তিনি মোহনগঞ্জ কর্তৃপক্ষের দেওয়া বিদায়ী সংবর্ধনা নিতে মোহনগঞ্জ আসেন। এরপর তিনি মোহনগঞ্জ পৌর শহরের খাদ্যগুদামসংলগ্ন তুবা টেলিকম থেকে বাকিতে ১ লাখ ৭০ হাজার এবং মিনারা টেলিকম থেকে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা ও নিজের কাছে থাকা আরও ৩৩ হাজার ৩০০ টাকা একাধিক মুঠোফোন নম্বরে বিকাশের মাধ্যমে পাঠান।
আনার কলি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল নয়টা ৪৮ মিনিটে গ্রামীণফোনের পরিচয় দিয়ে আমার নম্বরে একটি কল আসে। ওপাশ থেকে আমাকে জানায়, কী একটি প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছি। উপহার হিসেবে আমি গাড়ি না ২২ লাখ ৫৬ হাজার টাকা উপহার নেব তা জানতে চাওয়া হয়। আমি টাকা চাইলে ভ্যাটসহ নানা অজুহাতে আমার কাছ থেকে টাকা নিতে থাকে। আমি দুটি বিকাশ এজেন্ট থেকে বাকিতে পৌনে তিন লাখ টাকা ও আমার সঙ্গে থাকা ৩৩ হাজার ৩০০ টাকা পাঠাই। বেলা দেড়টার দিকে ওরা আমাকে বলে ১০ মিনিটের মধ্যে ২২ লাখ টাকা নিয়ে ওদের লোক আমার কাছে আসবে। আমি ঘণ্টা খানেক সময় বসে থাকলেও কেউ আসেনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি জীবনে কোনোদিন টাকার লোভ করিনি। অথচ ওদের কথায় কীভাবে আমি জড়িয়ে গেলাম বুঝতে পারিনি।’
বিকাশ এজেন্ট মিনারা টেলিকমের মালিক মুকসুদুর হাসান বলেন, ‘ওই কর্মকর্তা আমাদের উপজেলায় চাকরি করেন। তাই তাঁর কথামতো পাঁচটি মুঠোফোন নম্বরে বিকাশের মাধ্যমে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা পাঠাই। পরে তিনি আর টাকা শোধ করতে পারেননি। শেষে ইউএনও স্যারের উপস্থিতিতে ম্যাডাম টাকা পরিশোধের আশ্বাস দেন।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা (ইউএনও) মোজাম্মেল হক বলেন, শিক্ষা কর্মকর্তা আনার কলি সহজ-সরল প্রকৃতির মানুষ। তিনি মুঠোফোন চক্রের প্রতারণার শিকার হয়েছেন। আইনি সহায়তা নিলে প্রশাসন তাঁর পাশে থাকবে। মোহনগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আরিফুর রহমান বলেন, ওই নারী শিক্ষা কর্মকর্তা গতকাল শুক্রবার ১২টি মুঠোফোন নম্বর উল্লেখ করে প্রতারণার অভিযোগে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
গ্রামীণফোন বারহাট্টা, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরি ও ধরমপাশার আঞ্চলিক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, গ্রামীণফোন এ ধরনের কোনো উপহার দিচ্ছে না। এটা প্রতারক চক্রের নিছক প্রতারণা। একটি চক্র গ্রামীণফোনের নাম ব্যবহার করে এভাবে প্রতারণায় লিপ্ত রয়েছে।