লোপাট ২১ হাজার কোটি টাকা

এমএলএম, সমবায় ও ই-কমার্সের নামে দেড় দশকে লাখ লাখ গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। কেউ ফেরত পাননি।

বড় ছাড়ে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পণ্য কিনে আবার বিক্রি করতেন পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী সালাহউদ্দিন। এই ‘রি-সেলিং’ বা পুনঃ বিক্রির ব্যবসায় সর্বশেষ তাঁর বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছিল দুই কোটি টাকা, যা এখন আর ফেরত পাচ্ছেন না তিনি।

সালাহউদ্দিন পাঁচটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে পণ্য কিনতে টাকা জমা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে দুটির মালিক প্রতারণার মামলায় কারাগারে। একটির মালিক বিদেশে পালিয়ে গেছেন। দুটি টাকা ফেরত দিচ্ছে না। তিনি গত সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি এখন নিঃস্ব। টাকা ফেরত না পেলে আমার পরিবারের কী হবে, সেই দুশ্চিন্তায় দুই মাস ধরে রাতে ঘুমাতে পারি না।’

ই-কমার্সের নামে প্রতারণার শিকার হাজার হাজার মানুষের একজন এই সালাহউদ্দিন। সম্প্রতি এই প্রতারণা সামনে এসেছে। এমনই আরেক প্রতারণার শিকার হয়ে ৯ বছর আগে আত্মহত্যা করেন বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের একটি মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক দীপক দত্ত। তিনি ছিলেন যুব কর্মসংস্থান সোসাইটি (যুবক) নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সাড়ে তিন লাখ আমানতকারীর একজন, যাঁরা বিনিয়োগ করে আর টাকা ফেরত পাননি।

শিক্ষক দীপক দত্ত নিজের সম্বলের পাশাপাশি আত্মীয়স্বজন ও পরিচিতজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে যুবককে দিয়েছিলেন মোট ২৬ লাখ টাকা। ২০০৬ সালে অবৈধ ব্যাংকিংয়ের অভিযোগে যুবকের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়ে পাওনা ফেরতের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। যদিও তারা টাকা ফেরত দেয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পাওনা টাকার জন্য দীপক দত্তের স্বজন ও পরিচিতরা প্রতিদিনই তাঁর বাড়িতে এসে চেঁচামেচি করতেন। সহ্য করতে না পেরে ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। দীপক দত্তের বন্ধু জামাল হোসেন গত শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, পাওনাদারদের চাপে একসময় দীপকের স্ত্রী এলাকা ছাড়েন। আর তাঁর কোনো খোঁজ নেই।

সেই যুবক, এখনকার ই-কমার্স এবং বহুস্তর বিপণন (এমএলএম) কোম্পানি ও সমবায় সমিতি—সব মিলিয়ে গত ১৫ বছরে ২৮০টি প্রতিষ্ঠান মানুষের অন্তত ২১ হাজার ১৭ কোটি টাকা লোপাট করেছে বলে বেরিয়ে এসেছে। সব ক্ষেত্রেই উপায় ছিল গ্রাহককে বেশি মুনাফা ও ছাড়ের লোভ দেখানো। টাকার এই হিসাব বাংলাদেশ ব্যাংক, যুবকের ঘটনায় গঠন করা কমিশন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্ত ও গ্রাহকদের দাবির ভিত্তিতে তৈরি। এর মধ্যে রয়েছে ২০০৬ সালে যুবকের ২ হাজার ৬০০ কোটি, ২০১১ সালে ইউনিপে টু ইউর ৬ হাজার কোটি, ২০১২ সালে ডেসটিনির ৫ হাজার কোটি এবং ২০০৮ থেকে ২০১৭ সাল সময়ে ২৬৬টি সমবায় সমিতির গ্রাহকদের ৪ হাজার ১০০ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা।

এসবের বাইরে ২০২১ সালে ১১টি প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের টাকা ফেরত দিচ্ছে না বলে বেরিয়ে আসে। এর মধ্যে রয়েছে ই-অরেঞ্জের গ্রাহক ও সরবরাহকারীদের ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা, ই-ভ্যালির ১ হাজার কোটি টাকা, ধামাকার ৮০৩ কোটি টাকা, এসপিসি ওয়ার্ল্ডের ১৫০ কোটি টাকা, এহসান গ্রুপের ১১০ কোটি টাকা, নিরাপদডটকমের ৮ কোটি টাকা, চলন্তিকার ৩১ কোটি টাকা, সুপম প্রোডাক্টের ৫০ কোটি টাকা, রূপসা মাল্টিপারপাসের ২০ কোটি টাকা, নিউ নাভানার ৩০ কোটি টাকা এবং কিউ ওয়ার্ল্ড মার্কেটিংয়ের গ্রাহকদের ১৫ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা।

ইফতেখারুজ্জামান
ফাইল ছবি
সরকারের পক্ষ থেকে যদি পরিবীক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা যেত, তাহলে আজকের দুঃখজনক পরিস্থিতি তৈরি হতো না।
ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক, টিআইবি

বর্তমানে সিআইডি মোট ১৪টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ তদন্ত করছে। বেশির ভাগের বিরুদ্ধে গ্রাহককে পণ্য না দেওয়া, টাকা ফেরত না দেওয়া, চেক দিলেও ব্যাংকে টাকা না থাকা এবং সরবরাহকারীদের টাকা না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

দেড় দশকে মানুষের টাকা লোপাটের ঘটনা বেরিয়ে আসার পর মামলা হয়েছে। কোনো কোনো ঘটনায় আসামিরা আত্মগোপন করেছেন। কোনো কোনো মামলায় আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। কেউ কেউ দীর্ঘদিন ধরে কারাবাস করছেন। কিন্তু গ্রাহকেরা টাকা ফেরত পাননি।

যেমন যুবকের ঘটনা বেরিয়ে আসে ২০০৬ সালে। আমানতকারীরা বলছেন, যুবকের অনেক সম্পদ ও জমি আছে। সেগুলো বিক্রি করে গ্রাহকদের টাকা দেওয়ার দাবিতে নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কিন্তু ১৪ বছরেও কিছু হয়নি। যুবকের ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকের সংগঠন জনকল্যাণ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে টাকা ফেরত দিতে তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আবেদন করেছিলেন। এ বিষয়ে পদক্ষেপ দিতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে বলাও হয়েছিল। অর্থ মন্ত্রণালয় প্রশাসক নিয়োগের অনুমতি দিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছে। তিনি বলেন, দুই বছর ধরে শুধু চিঠি–চালাচালি হয়েছে। কাজ হয়নি।

কেউ দায় নেয় না

ই-কমার্স কেলেঙ্কারির সবকিছুই হয়েছে প্রকাশ্যে, ডিজিটাল মাধ্যমে। প্রতিষ্ঠানগুলো ওয়েবসাইট খুলে গ্রাহককে বিশাল ছাড়ে পণ্য দেওয়ার লোভ দেখিয়েছে। বিপুল টাকা তুলেছে। লেনদেন করেছে ব্যাংক ও মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। অভিযোগ হলো, সরকারের দপ্তরগুলো যথাসময়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেনি।

আলোচিত ইভ্যালি যাত্রা শুরু করে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে। শুরু থেকেই তারা বিভিন্ন অফারের মাধ্যমে বাজারদরের চেয়ে অনেক কম দামে পণ্য বিক্রি শুরু করে। মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে। অবশ্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে পণ্য না দেওয়া ও টালবাহানা করার অভিযোগও জমা পড়ছিল। ইভ্যালির মতো আরও অনেক প্রতিষ্ঠান আশ্চর্যজনক হারে ছাড় দিয়ে পণ্য বিক্রি শুরু করে। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠানের সন্দেহজনক ব্যবসায়িক কৌশল সরকারের কোনো সংস্থা খতিয়ে দেখার কোনো চেষ্টা করেনি।

২০২০ সালের আগস্ট মাসে কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সন্দেহজনক ব্যবসায়িক কৌশল নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর নড়েচড়ে বসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। নিজেরা একটি কমিটি করে, চিঠি পাঠানো হয় সরকারের বিভিন্ন সংস্থাকে। অনুসন্ধান চলে। এক মাসের জন্য ইভ্যালির ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়। কিন্তু ব্যবসা চলতে থাকে। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১৮ জুন এক প্রতিবেদনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানায়, এ বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইভ্যালির দেনা ছিল ৪০৩ কোটি টাকা। বিপরীতে চলতি সম্পদ ছিল মাত্র ৬৫ কোটি টাকার। গ্রাহকের প্রতারণা মামলায় সবশেষ গত বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার হন ই-ভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল। রাসেলের বরাত দিয়ে র‌্যাব জানিয়েছে, সর্বশেষ ইভ্যালির দেনার পরিমাণ ১ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। তবে ব্যাংকে আছে মাত্র ৩০ লাখ টাকা। আর ডিজিটাল লেনদেনের গেটওয়ের কাছে আছে ৩০ থেকে ৩৫ কোটি টাকা। বিপুল দেনা কীভাবে পরিশোধ করবেন, তা রাসেল জানেন না বলে র‌্যাবকে বলেছেন।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিপুল ছাড় দিয়ে পণ্য বিক্রির বিষয়টি শুরুতেই অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে আজকের পরিস্থিতি তৈরি হতো না। এ ক্ষেত্রে যাঁদের তদারকির দায়িত্ব ছিল, তাঁরা তা ঠিকমতো পালন করেননি।

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর সন্দেহজনক ব্যবসা যখন জমজমাট, তখন বাণিজ্যসচিব ছিলেন মো. জাফর উদ্দীন। তিনি ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে গত জুন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি অবসরে চলে গেছি। ই-কমার্স নিয়ে কোনো কথা বলতে পারব না।’

ই-কমার্সের সন্দেহজনক ব্যবসা নিয়ে তদন্তে প্রতিযোগিতা কমিশনও সক্রিয় হয় এবং অনিয়ম খুঁজে পায়, তবে সেটা গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর। এ বিষয়ে কমিশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইভ্যালির অস্বাভাবিক কমিশনে পণ্য বিক্রির বিষয়টি অনুসন্ধান করতে ২০২০ সালের আগস্ট মাসে একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাঁর প্রতিবেদনে ইভ্যালির কিছু কাজ প্রতিযোগিতা আইন লঙ্ঘন করেছে বলে উঠে আসে। এরপর মামলা শুরু করা হয়।

প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিজ থেকে উদ্যোগী হয়ে আমরা ইভ্যালির বিরুদ্ধে মামলা করেছি। মামলাটি চলমান রয়েছে।’

অবশ্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রতিযোগিতা কমিশন প্রতিযোগিতা আইন লঙ্ঘনের বিষয়ে শুরুতেই ব্যবস্থা নিলে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো বিপুল ছাড়ের লোভ দেখিয়ে গ্রাহকের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করতে পারত না। শুধু এখনকার ই-কমার্স নয়, যুবক, ডেসটিনি, ইউনিপে টু ইউ, সমবায় সমিতি—প্রতিটি ক্ষেত্রেই মানুষের কাছ থেকে বিপুল অর্থ সংগ্রহ করার পর ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগী হয় সরকারি সংস্থাগুলো। আগে থেকে তারা সক্রিয় হয়নি।

মামলাও নিষ্পত্তি হয়নি

২০১২ সালে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠলে ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে দুটি আলাদা মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একটিও নিষ্পত্তি হয়নি। তবে ২০১২ সাল থেকে রফিকুল আমীন কারাগারে রয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডেসটিনি প্রায় ৪৫ লাখ গ্রাহকের কাছ থেকে পাঁচ হাজার কোটির বেশি টাকা সংগ্রহ করে। ডেসটিনির বিনিয়োগকারীদের সমন্বয়কারী মোশারফ হোসেন প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, ডেসটিনির সম্পদের পরিমাণ ১২ হাজার কোটি টাকার। এত সম্পদ থাকার পরও যথাযথ উদ্যোগ না থাকায় গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়া যাচ্ছে না।

২০১৪ সালে যুবকের চেয়ারম্যান আবু মোহাম্মদ সাঈদসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় পুলিশ মামলা করে। মামলাটি পরে দুদকে যায়। এখন মামলার তদন্তের দায়িত্বে আছে সিআইডি। যদিও তদন্ত শেষ হয়নি। অভিযোগপত্রও দেওয়া হয়নি। আসামিদের সবাই জামিনে রয়েছেন।

২০০৯ সালের অক্টোবর মাসে ইউনিপে টু ইউ ১০ মাসে দ্বিগুণ লাভের লোভ দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে টাকা নেওয়া শুরু করে। আমানতকারীরা জানিয়েছেন, ইউনিপে টু ইউতে মোট ছয় লাখ বিনিয়োগকারী ছয় হাজার কোটি টাকা জমা রেখেছিলেন। কেউ টাকা ফেরত পাননি। তবে দুদকের মামলায় ইউনিপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মুনতাসির হোসেনসহ ছয়জনের সাজা হয়েছে। মুনতাসির এখন কারাগারে।

টাকা ফেরত পাননি সমবায়ের সদস্যরা

সমবায় অধিদপ্তরের ২০১৭ সালের এক প্রতিবেদন বলছে, ২০০৮ সাল থেকে ওই বছর পর্যন্ত ২৬৬টি সমবায় সমিতি প্রায় ৪ হাজার ১০০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। সমবায় অধিদপ্তরের যুগ্ম নিবন্ধক (অডিট ও আইন) নবীরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৭ সালের পরে সমন্বিত আর কোনো প্রতিবেদন করা হয়নি। নানা অভিযোগে সমবায় অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন নেওয়া তিন শতাধিক সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে তদন্ত করছে দুদক। তিনি বলেন, ২৬৬ সমিতির বিরুদ্ধে দুদক তদন্ত করে সমবায় অধিদপ্তরকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে। সমবায় অধিদপ্তর জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

অবশ্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, গ্রাহকেরা টাকা ফেরত পাননি। বেরিয়ে আসছে আরও ঘটনা। ১০ সেপ্টেম্বর পিরোজপুরের এহসান মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির চেয়ারম্যান রাগীব আহসানকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এহসান গ্রুপ গ্রাহক ও সমিতির সদস্যদের কাছ থেকে ১১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ।

এহসান মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটিতে সাড়ে আট লাখ টাকা সঞ্চয় করেছিলেন বলে দাবি করে পিরোজপুরের আক্তারুজ্জামান গত সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, দুই বছর ধরে তারা কোনো টাকা দিচ্ছে না।

‘জবাবদিহি থাকলে এমন হতো না’

দুর্নীতি প্রতিরোধে কাজ করা সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান মনে করেন, যারা গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করেছে, তাদের আইনি প্রক্রিয়ায় জবাবদিহির মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। দেশের আইনি কাঠামো যথেষ্ট শক্তিশালী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আইনে সুযোগ থাকলেও দেশে তার প্রয়োগ নেই। যে কারণে গ্রাহকেরা কখনোই টাকা ফেরত পান না।

ই-কমার্সের নামে গ্রাহকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে যদি পরিবীক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা যেত, তাহলে আজকের দুঃখজনক পরিস্থিতি তৈরি হতো না।