শান্তিনিকেতনে ব্যবসায়ী হত্যায় মামলা

ছবিটি প্রতীকী
ছবিটি প্রতীকী

ধনাঢ্য ব্যবসায়ী তোবারক হোসেন খুনের ঘটনায় রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় মামলা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে তোবারকের ভাই মোবারক হোসেন বাদী হয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় হত্যা মামলা করেন। তবে পুলিশ এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় করা মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। এতে হত্যাকাণ্ডের কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি।

গতকাল বুধবার ভোরে চার-পাঁচজন দুর্বৃত্ত শান্তিনিকেতনের তোবারকের চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটের ডোরবেল বাজায়। এ সময় তাঁর পালিত ছেলে সাইফুল ইসলাম দরজা খুলে দিলে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তোবারককে হত্যা করে। পুলিশ তোবারককে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তোবারকের বাসার স্টিলের আলমারি ভাঙা ছিল।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার পরিদর্শক (অভিযান) ইফতেখার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। খুনিরা স্টিলের আলমারি ভেঙে টাকা লুট করেছে কি না তা এখনো জানা যায়নি। বাড়ির আটক দুই নিরাপত্তা কর্মী ও তোবারকের পালিত ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। দুই বছর আগে থেকে তোবারকের স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে অন্যত্র থাকছেন। তাঁরাও হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারছে না। তিনি বলেন, ভবনটিতে কোনো সিসি (ক্লোজড সার্কিট) ক্যামেরা নেই। তবে রাস্তার সিসি ক্যামেরা ফুটেজ বিশ্লেষণ করে খুনিদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

তোবারকের ভাগনে প্রকৌশলী হোসেন মোহাম্মদ কামরুল অবশ্য প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর মামার মহাখালীতে মামা প্লাজা নামে ছয়তলা একটি মার্কেট রয়েছে। মার্কেট থেকে আয় হওয়া টাকা তাঁর মামা বস্তায় ভরে বাসায় রাখতেন। খুনিরা সেই বস্তাভর্তি টাকা নিয়ে যেতে পারে।

তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) ওয়াহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তোবারক চট্টগ্রামের শফি মাইজভান্ডারির অনুসারী ছিলেন। এ কারণে তাঁর বাসায় অনেক লোকজন আসতেন। তোবারকের ভক্ত হাসান ভবনের নিচে থাকতেন। ঘটনার পর তিনি তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় ফোন করে জানান, দুর্বৃত্তরা তাঁর মালিককে কুপিয়েছে এবং তাঁকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই হাসান পালিয়ে গেছেন। ওই হত্যাকাণ্ডে তিনি জড়িত থাকতে পারেন।

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তোবারকের স্ত্রী পারভীন ইসমত আরার অভিযোগ ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জের ধরে খুনের ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি জানান, ব্যবসায়িক ও মতাদর্শ নিয়ে বিরোধের বিষয় প্রাধান্য দিয়ে মামলার তদন্তকাজ চলছে।

পারিবারিক সূত্র জানায়, তোবারকের এক ছেলে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। তিনি আগামীকাল শুক্রবার দেশে ফিরবেন। এরপর তোবারকের জানাজা শেষে লাশ কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের পলপাড়ায় দাফন করা হবে। তোবারকের লাশ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।