শিশুকে হত্যা করে লাশ ভাসিয়ে দেয় আরেক শিশু

শিশুর প্রতি নিষ্ঠুরতা

দুজনের বাসা পাশাপাশি। বয়সে এক বছরের ছোট–বড়। খেলার সাথি তারা। কটূক্তি করায় একদিন খেলার একপর্যায়ে মো. শাওনকে (১০) গলা টিপে হত্যা করে তারই বন্ধু ১১ বছর বয়সী আরেক শিশু। এরপর সে লাশটি বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দেয়। ওই ভয়ানক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা আজ শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালতের কাছে স্বীকার করেছে শিশুটি। ঘটনাটি গত আগস্টে, চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেড থানার আকমল আলী রোডের জেলে পাড়াসংলগ্ন বেড়িবাঁধে।

ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উৎপল বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, গত ১৫ আগস্ট বঙ্গোপসাগরের উপকূলে একটি শিশু শাওনের লাশ ভাসতে দেখে জেলেরা পুলিশকে খবর দেয়। পরে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করা হয়। শিশুটির শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন না থাকায় সবার ধারণা ছিল পানিতে পড়ে শিশুটি মারা গেছে। শিশুটির পরিবারও তা–ই ভেবেছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার শাওনের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেখানে বলা হয় তাকে হত্যা করা হয়েছে। সেদিনই তার খেলার সঙ্গী ওই শিশুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে পুরো ঘটনা স্বীকার করে। তাকে আদালতে পাঠানো হলে জবানবন্দি দেয়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, শিশুটি জবানবন্দিতে জানায়, গত ১৫ আগস্ট বিকেলে নগরের ইপিজেড থানার আকমল আলী রোডের জেলে পাড়াসংলগ্ন বেড়িবাঁধের ওপর খেলা করছিল ওই দুই শিশু। খেলা নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়। তখন শিশু শাওন তাকে ‘মুঠো’ বলে গালি দেয়। এর আগেও তাকে এই গালি দিত। সেদিন ক্ষুব্ধ হয়ে শাওনের গলা টিপে ধরে শিশুটি। কিছুক্ষণ পর তার কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে বেড়িবাঁধের পাশে সাগরে লাশটি টেনে নিয়ে ফেলে দেয়। লাশটি পানিতে ভাসার পর সে বাসায় চলে আসে।
শাওনের বাবা আবদুর রহিম প্রথম আলোকে বলেন, আর কোনো শিশু যাতে এভাবে প্রাণ না হারায়, মা–বাবার সতর্ক হওয়া উচিত। লাশটি উদ্ধারের পর তাঁরাও ধারণা করেছিলেন, পানিতে পড়ে মারা গেছে তাঁর ছেলে। কিন্তু ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে আসে শাওনকে হত্যা করা হয়েছে।