ধরা পড়ে টাকা ফেরত দিলেন ইউপি সদস্য

সহায়তার চাল
ফাইল ছবি

গ্রামের অভাবী-দরিদ্র মানুষের নামে বরাদ্দ হয়েছিল খোলা বাজারে বিক্রির (ওএমএস) আওতায় ১০ টাকা কেজি দরের সরকারি চাল। সেই চাল পরিবেশকের সঙ্গে যোগসাজশ করে চার বছর ধরে নিজেই তুলে ভোগ করছিলেন এক ইউপি সদস্য। পরে বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই ইউপি সদস্যকে চার বছরে তাঁর মোট ভোগ করা চালের অর্থমূল্য হিসাব করে ১ লাখ ৮ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আজ বুধবার সকালে উপজেলা প্রশাসনের কাছে সেই টাকা বুঝিয়েও দিয়েছেন তিনি।

ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নে। ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোতাহার হোসেন চাল আত্মসাৎ করেছিলেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁর সঙ্গে যোগসাজশ করার অপরাধে ওই ওয়ার্ডের চাল পরিবেশক দুলাল মিয়াকে ৪০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার ওই ওয়ার্ডে এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। আদালত পরিচালনা করেন কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইসমত আরা।

ওএমএসের ১০ টাকা কেজি দরের চাল মাসে ৩০ কেজি করে বছরে পাঁচবার দেওয়ার কথা ছিল কার্ডধারী লোকজনকে। মোতাহার হোসেন তাঁর ওয়ার্ডের ২০ জন ব্যক্তির নামে বরাদ্দ করা ১০ টাকা কেজি দরের ওই চাল উপকারভোগীদের না দিয়ে নিজেই তুলে নেন। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকেই তিনি ওই ব্যক্তিদের কার্ডে চাল তুলছিলেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, ওএমএসের ১০ টাকা কেজি দরের চাল মাসে ৩০ কেজি করে বছরে পাঁচবার দেওয়ার কথা ছিল কার্ডধারী লোকজনকে। মোতাহার হোসেন তাঁর ওয়ার্ডের ২০ জন ব্যক্তির নামে বরাদ্দ করা ১০ টাকা কেজি দরের ওই চাল উপকারভোগীদের না দিয়ে নিজেই তুলে নেন। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকেই তিনি ওই ব্যক্তিদের কার্ডে চাল তুলছিলেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি উপজেলা প্রশাসনকে জানান। এরপর বেশ কয়েক দিন ধরে গোপনে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হয়। মঙ্গলবার সরাসরি সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে গিয়ে এলাকার লোকজন ও কার্ডের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে এই প্রতারণার সত্যতা মেলে। যাঁদের নামে কার্ড ইস্যু করা হয়েছে, তাঁরা কার্ড ইস্যুর বিষয়টিই জানতেন না। তাঁদের নামে চাল তোলার বিষয়ে কোনো তথ্যই জানানো হয়নি।

এ অপরাধের শাস্তি হিসেবে ভ্রাম্যমাণ আদালত ভোক্তা অধিকার আইনে স্থানীয় চাল পরিবেশক দুলাল মিয়াকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অপর দিকে ইউপি সদস্য মোতাহার হোসেনকে ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে এখন পর্যন্ত মোট ১৮ মাসের ওঠানো চালের দাম ১ লাখ ৮ হাজার টাকা হিসাব করে তা বুধবারের মধ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

কাপাসিয়ার ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইসমত আরা আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘রায়েদ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্যকে সরকারি চাল আত্মসাতের অপরাধে চালের মূল্য বাবদ ১ লাখ ৮ হাজার টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে বলা হয়েছিল। তিনি আজ সকালে আমার কাছে টাকাগুলো জমা দিয়ে গিয়েছেন। আমরা তা ব্যাংকে জমা করেছি। তা ছাড়া ইউপি সদস্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ওই ওয়ার্ডের পরিবেশকের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড আদায় করা হয়।’