সাবেক ছাত্রলীগ নেতাসহ চারজনকে পিটিয়ে আহত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠচক্রবিষয়ক সাবেক সম্পাদকসহ চার শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করেছেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। গত বুধবার দিবাগত রাতে নবাব আবদুল লতিফ হলের ৩০১ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহত শিক্ষার্থীরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখার গত কমিটির (আহমেদ-বিপু) শিক্ষা ও পাঠচক্রবিষয়ক সম্পাদক নূর জাহিদ সরকার, লোকপ্রশাসন বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী নূর কুতুবুল আলম, একই বর্ষের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ও ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী নিশান চৌধুরী। তাঁরা সবাই লতিফ হল শাখা ছাত্রলীগের আগের সভাপতি প্রার্থী শামীমের অনুসারী।
এ ঘটনার পরে সকালে ছাত্রলীগের কর্মীরা ওই কক্ষের ল্যাপটপ, গিটার, শিক্ষা-সনদসহ প্রায় দেড় লাখ টাকা মূল্যের জিনিসপত্র লুটপাট করেছেন বলে অভিযোগ করেন ওই কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগের সাবেক শিক্ষা ও পাঠ্যচক্রবিষয়ক সম্পাদক নূর জাহিদ সরকার রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা দিতে রাজশাহীতে এসে ৩০১ নম্বর কক্ষে অবস্থান করছিলেন। এ সময় হল ছাত্রলীগ সভাপতি মিজানুর ইসলামের অনুসারী ভাষা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নিরব, তৃতীয় বর্ষের নাজমুল, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সমীরন কুমার মণ্ডল, নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সংগীত, সানোয়ারসহ ১০-১২ জন ওই কক্ষে প্রবেশ করে সবাইকে বের হয়ে যেতে বলেন। কিন্তু কেউ বের হতে না চাইলে রড-হাতুড়ি দিয়ে সবাইকে এলোপাতাড়ি পেটানো হয়। একপর্যায়ে নিয়ন ও মোস্তাফিজুর দৌড়ে হলের নিচতলায় পুলিশ কক্ষে গিয়ে আশ্রয় নেন। এ সময় হামলাকারীরা নূর কুতুবুল আলমকে মারধর করতে করতে তিনতলা থেকে দুই তলায় নিয়ে এলে তিনি বারান্দায় লুটিয়ে পড়েন। সেখানে পুলিশ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হলে হামলাকারীরা চলে যান। পরে হল পুলিশ আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে পাঠায়।
ছাত্রলীগের সাবেক নেতা নূর জাহিদ সরকার বলেন, ‘শুক্রবার অনুষ্ঠেয় নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে আমিসহ আরও দুজন পরীক্ষার্থী হলের ছোট ভাইয়ের কক্ষে উঠি। হঠাৎ কয়েকজন মুখে গামছা-রুমাল পেঁচিয়ে রড-হাতুড়ি দিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমি তখন পরিচয় দিলেও তারা পেটাতে থাকে।’
জানতে চাইলে নবাব আবদুল লতিফ হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর ইসলাম বলেন, ‘ওই কক্ষে ছাত্রদলের কর্মীরা নাশকতার একটি পরিকল্পনা করছিল। তারা রাকাবের নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত। পরে ছাত্রলীগ ওটা জানতে পারলে ওদের বাধা দেয়।’ কক্ষে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নূর জাহিদ সরকার ছিলেন উল্লেখ করলে মিজানুর বলেন, ছাত্রদল কর্মীদের সঙ্গে তিনি কী করছিলেন, সেটাও দেখতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, ওই হলের ছাত্রলীগের নেতারা বিষয়টি দেখবেন। আর লুটপাটের কোনো ঘটনা তিনি জানেন না বলে জানান। যদি এ ধরনের কিছু ঘটে, তবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার হবে।
হল প্রাধ্যক্ষ বিপুল কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’