সাবেক ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ

তদন্তে বলা হয়েছে, ট্রাস্টকে ডুবিয়েছেন এমডি ইফতেখারুল, উপমহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) সিরাজুল ও ট্রাস্টের সাবেক সচিব সাঈদ মাহমুদ।

দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, নীতিমালা লঙ্ঘন ও মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টকে ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ট্রাস্টের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ইফতেখারুল ইসলাম খান, উপমহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. সিরাজুল ইসলাম ও ট্রাস্টের সাবেক সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা ও আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া ট্রাস্টের ক্ষতির সমপরিমাণ টাকা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে আদায়ের কথা বলা হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি ২০২০ সালে কল্যাণ ট্রাস্টের এই কর্মকর্তাদের বিষয়ে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত করার পর সত্যতা পায়। তাদের এই সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য গত সপ্তাহে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ট্রাস্টের সাবেক এমডি ইফতেখারুল ইসলাম খান, সাবেক সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা হওয়ায় তাঁদের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ হলো জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। আর উপমহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. সিরাজুল ইসলাম মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের নিয়ন্ত্রণাধীন। এ অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টে চিঠি পাঠিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন

আত্মপক্ষ সমর্থন করে কোনো বক্তব্যও পাঠাননি। ইফতেখারুল ইসলামের ছেলে ময়মনসিংহে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। তাঁর সেবাযত্নে সার্বক্ষণিক কাজ করার জন্য মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের তিনজন কর্মচারীকে সেখানে নিয়োগ করা হয়। তাঁদের বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয় হয়েছে ১৬ লাখ ৪৮ হাজার ৩১৫ টাকা। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাস্টের একজন গাড়িচালককে সার্বক্ষণিক ইফতেখারুল ইসলামের বাসায় নিয়োজিত করা হয় এবং বেতন-ভাতা দেওয়া হয় ট্রাস্ট থেকে।

মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ১৯৭২ সালে। মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট তার অধীনে দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনা করে আয় করবে। সেই আয় দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কর্মসংস্থান ও আর্থিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে, এটাই ছিল উদ্দেশ্য।

কিন্তু সে উদ্দেশ্য সফল হয়নি বলা যায়। গত ৪ মার্চ জাতীয় সংসদে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী জানান, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের মোট সম্পদের পরিমাণ ৩৯১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে স্থায়ী সম্পদ ১ কোটি ৬১ লাখ, বিনিয়োগ (এফডিআর) ২৩৪ কোটি ৭৫ লাখ ও চলতি সম্পদ ১৫৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এ বিপুল সম্পদ নিয়েও ট্রাস্টের আর্থিক অবস্থা খুবই করুণ। সম্পদশালী ট্রাস্টের জমি আছে প্রায় ৭০ একর। রক্ষা করতে না পেরে এখন সম্পত্তি বিক্রি করে দিচ্ছে ট্রাস্ট।