সোলারের ব্যাটারি চুরিতে বাধা দেওয়ায় খুন হন গ্রাম পুলিশ সদস্য: র‍্যাব

লাশ
প্রতীকী ছবি

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার গ্রাম পুলিশ সদস্য আবদুর রউফের (৫০) ঘরে থাকা সৌরবিদ্যুৎ প্যানেলের ব্যাটারি চুরিতে বাধা দেওয়ায় তাঁকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এরপর তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ ঘটনায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) হাতে গ্রেপ্তার দুই ব্যক্তি জিজ্ঞাসাবাদে এই তথ্য জানিয়েছেন।

অন্যদিকে এ ঘটনায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ইয়াসিন মিয়া (২০) নামের আরেক যুবক আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁর বাড়ি তাহিরপুর উপজেলার মাটিকাটা গ্রামে।

তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের বুড়খাড়া গ্রামে গত বুধবার রাতে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আবদুর রউফ গ্রাম পুলিশ সদস্য হিসেবে উত্তর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) কর্মরত ছিলেন। পরিবারে তাঁর স্ত্রী ও চার সন্তান আছে। বুধবার রাতে খাবার ঘরের এক কক্ষে সন্তানদের নিয়ে স্ত্রী শিরিনা বেগম ঘুমিয়ে পড়েন। বাড়িতে নতুন করে বানানো আরেকটি ঘরে ছিলেন রউফ। রাত সাড়ে তিনটার দিকে সাহরি খাওয়ার জন্য ঘুম থেকে ওঠেন শিরিনা বেগম। তিনি ওই কক্ষে গিয়ে দেখেন আবদুর রউফ নেই। পরে তিনি বারান্দায় গিয়ে দেখেন সেখানে আবদুর রউফের রক্তাক্ত লাশ পড়ে আছে।

এ ঘটনায় নিহত আবদুর রউফের বোন জাহানারা বেগম বাদী হয়ে থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। তাহিরপুর থানা-পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে মাটিকাটা গ্রাম থেকে ইয়াসিন মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। পরে গতকাল শুক্রবার তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাহিরপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম।

এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গতকাল রাতে র‌্যাবের সুনামগঞ্জ কোম্পানির (সিপিসি-৩) সদস্যরা তাহিরপুর উপজেলার হলহলিয়া চরগাঁও গ্রামের আবদুল হেকিম (৩০) ও বুড়খাড়া গ্রামের এনামুল হক ওরফে শাবনুরকে (২৫) গ্রেপ্তার করে।

আজ র‌্যাবের সুনামগঞ্জ কোম্পানির অধিনায়ক সিঞ্চন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা জানিয়েছেন যে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাঁরা তিনজন জড়িত। অন্যজন হলেন হলহলিয়া চরগাঁও গ্রামের সোহেল মিয়া (২৮)। ব্যাটারি নিয়ে আসার সময় রউফের ঘুম ভেঙে যায়। তখন তিনি চিৎকার দিয়ে তাঁদের জাপটে ধরার চেষ্টা করলে তাঁকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে সেখানেই তিনি মারা যান।

র‌্যাবের সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ রাসেল বলেন, হেকিম ও এনামুলকে তাহিরপুর থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল লতিফ তরফদার বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত একজনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। র‌্যাব কাউকে আটক করেছে কি না, সেটি আমরা জানি না।’