স্কুলছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু, বাবার অভিযোগ হত্যা

আনুশকা হায়াত বন্ধন
আনুশকা হায়াত বন্ধন

শেরপুরে ফৌজিয়া-মতিন পাবলিক স্কুলের ছাত্রীনিবাসে এক স্কুলছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে জেলা সদর হাসপাতাল থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ছাত্রীর বাবা একে হত্যাকাণ্ড বলে অভিযোগ করেছেন।

ওই ছাত্রীর নাম আনুশকা হায়াত বন্ধন (১৪)। সে শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলা সদরের পূর্বছনকান্দা গ্রামের আনোয়ার জাহিদ বাবুলের মেয়ে। আনুশকা ওই স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

ফৌজিয়া-মতিন পাবলিক স্কুলের অধ্যক্ষ আবু তাহা সাদী আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, আনুশকা তাঁর বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। এরপর থেকে এই স্কুলেই পড়ালেখা করছিল। সে স্কুলের ছাত্রীনিবাসের দোতলার একটি কক্ষে থাকত। তার সঙ্গে স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির একজন ও শেরপুর সরকারি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী রিয়া থাকত। আজ দুপুর ১২টার দিকে কলেজছাত্রী রিয়া ছাত্রীনিবাসের দোতলায় তাঁর কক্ষে গিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ দেখতে পায়। এ সময় ডাকাডাকি করে কোনো সাড়া না পেয়ে সে (রিয়া) ধাক্কা দিয়ে দরজা খোলে এবং ওই কক্ষের ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না দিয়ে প্যাঁচানো আনুশকাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। এ সময় রিয়ার চিৎকারে স্কুলের ৭-৮ জন শিক্ষক ওই কক্ষে গিয়ে আনুশকাকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে দ্রুত জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে (আনুশকা) মৃত বলে ঘোষণা করেন।

সংবাদ পেয়ে সদর থানা–পুলিশ জেলা সদর হাসপাতালে গিয়ে আনুশকার লাশ উদ্ধার করে। পরে পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী আশরাফুল আজীম ও ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় আনুশকার কক্ষ থেকে তার ব্যবহৃত ডায়েরি উদ্ধার করা হয়। 

জেলা সদর হাসপাতালের মর্গের সামনে আনুশকার বাবা আনোয়ার জাহিদ অভিযোগ করে বলেন, গত শুক্রবার রাতে ও গতকাল শনিবার সকালেও ফোনে মেয়ের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। কিন্তু তার মধ্যে কোনো ধরনের অস্বাভাবিকতা দেখা যায়নি। আনুশকাকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি এর সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবি জানান।
তবে ফৌজিয়া-মতিন পাবলিক স্কুলের অধ্যক্ষ আবু তাহা সাদী প্রথম আলোকে বলেন, কেন ও কী কারণে আনুশকার মৃত্যু হয়েছে, সে ব্যাপারে তিনি কোনো কিছু জানেন না। তবে এ অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, আনুশকার মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। আনুশকার লাশের সুরতহাল প্রতিবেদনে গলায় মোটা দাগ দেখা গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে এ ঘটনায় কেউ আটক বা গ্রেপ্তার হয়নি।

অপর দিকে পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম প্রথম আলোকে বলেন, পুরো ঘটনাটি পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে। তদন্তপূর্বক আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।