স্বামী-সতিনকে আসামি করে মায়ের মামলা

নুসরাতের মা তানিয়া আক্তার মামলায় অভিযোগ করেছেন, নুসরাতের দাদা আবদুর রহিম তাঁর সম্পত্তি নাতনির নামে লিখে দেবে শুনে সুমন ও ঝুমুর মিলে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে। পরে নুসরাত আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচারণা চালান। ঘটনা ধামাচাপা দিতে নুসরাতের বাবা তড়িঘড়ি করে ঘটনার রাতেই থানায় মামলা করেন।

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার খাজুরিয়া গ্রামের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী নুসরাত জাহানের মৃত্যুর ঘটনায় তার মা তানিয়া আক্তার একটি হত্যা মামলা করেছেন। সোমবার বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনি স্বামী মো. সুমন মিয়া ও সতিন ঝুমুর বেগমসহ চারজনকে আসামি করে মামলাটি করেন। এদিকে দারুল ফালাহ প্রি-ক্যাডেট একাডেমির যে শিক্ষকের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে নুসরাতের বাবা মামলা করেছিলেন, সেই শিক্ষক মো. সফিকুল ইসলামকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

ওই আদালতের পেশকার ইলিয়াস হোসেন বলেন, বিচারক শাম্মী আক্তার মায়ের অভিযোগটি আমলে নেন।


মামলার অভিযোগে বাদী তানিয়া আক্তার বলেন, ‘নুসরাতের দাদা আবদুর রহিম তাঁর সম্পত্তি নাতনির নামে লিখে দেবে শুনে সুমন ও ঝুমুর মিলে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে। পরে নুসরাত আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচারণা চালান। ঘটনা ধামাচাপা দিতে নুসরাতের বাবা তড়িঘড়ি করে ঘটনার রাতেই থানায় মামলা করেন।’


তানিয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে নুসরাতের বাবা সুমন মিয়া বলেন, ‘প্রতিহিংসা থেকে আমাকে আসামি করা হয়েছে।’

আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসেন বলেন, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ মাথায় রেখেই মামলার তদন্ত চলছে। এজাহারভুক্ত আসামি শিক্ষক সফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।


এদিকে দারুল ফালাহ প্রি-ক্যাডেট একাডেমির পরিচালনা কমিটির এক জরুরি সভায় সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে করোনাকালে পাঠদান ও পরীক্ষা নেওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি সহকারী শিক্ষক সফিকুল ইসলামকে চাকরিচ্যুত করা করা হয়েছে। পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বাগধা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাখাওয়াৎ হোসেন প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

নুসরাতের বাবা সুমন মিয়া তাঁর করা মামলায় অভিযোগ করেছেন, তাঁর মেয়ে সাময়িক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি। এতে শিক্ষক সফিকুল মেয়েকে গালিগালাজ ও মারধর করেন। অপমানে ও অভিমানে মেয়ে আত্মহত্যা করে।