১০ মিনিটে নিয়ে গেল ১৬২ ফোন

মোবাইল ফোন
প্রতীকী ছবি

শরীয়তপুর জেলা শহরের পালং বাজারের মোবাইল ফোনসেট বিক্রির দোকানে চুরির ঘটনা ঘটেছিল ৫ অক্টোবর। মাত্র ১০ মিনিটে চোরচক্র ওই দোকান থেকে ১৬২টি মোবাইল ফোনসেট নিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ ওই চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। চাঁদপুর, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মঙ্গলবার শরীয়তপুর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার এসএম আশ্রাফুজ্জামান। তিনি বলেন, নয় সদস্যর ওই চক্র এর আগে নড়িয়ায় ওষুধের দোকানে, মোবাইল ফোনসেট বিক্রির দোকানে ও বিকাশ এজেন্টের টাকা চুরি করেছে। এ ছাড়া চক্রটি দেশের বিভিন্ন জেলায় ৫০টি দোকানে চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে।

শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানা সূত্র জানায়, জেলা শহরের পাংল বাজারের উত্তর প্রান্তে সেমন্ত ঘোষের মোবাইল ফোনসেট বিক্রির দোকান। ৫ অক্টোবর সকালে নয়জন চোরের একটি দল দোকানের দক্ষিণ দিকের শাটারের তালা কেটে ভেতরে প্রবেশ করেন। তাঁরা চারটি ব্যাগে ভরে ১৬২টি মোবাইল ফোনসেট নিয়ে পালিয়ে যান।

ওই দোকানের সিসি ক্যামেরায় দেখা গেছে, ভোর ৫টা ৩৮ মিনিটে পাঁচ তরুণ দোকানের সামনে আসেন। ৫টা ৩৯ মিনিটের দোকানের দক্ষিণ প্রান্তের গলিতে ঢোকেন চার তরুণ। আর এক তরুণ গলির সামনে একটি কাপড় দিয়ে পথ আটকে দাঁড়িয়ে থাকেন। এক তরুণ মুঠোফোন কানে দাঁড়িয়ে থাকেন আর তিন তরুণ শাটারের তালা কাটেন। সাটার খুলে দুজন ৫টা ৪২ মিনিটে ভেতরে  প্রবেশ করেন। চারটি ব্যাগে করে দোকানে থাকা ফোন সেটগুলো তুলে নেন। ৫টা ৫২ মিনিটে তাঁরা দোকান থেকে বেরিয়ে বাজারের উত্তর প্রান্তের সড়ক ধরে হেঁটে চলে যান।

সকাল ৯টার দিকে কর্মচারীরা দোকান খুলতে গেলে চুরির ঘটনা নজরে আসে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সিসি ক্যামেরার ভিডিও বিশ্লেষণ করে ও চোরচক্রের সদস্যদের মুঠোফোনে কথা বলার সূত্র ধরে তাদের শনাক্ত করা হয়। তাদের আটক করতে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম মিজানুর রহমান ও জেলা গোয়েন্দা পরিদর্শক সাইফুল আলম নেতৃত্বে চাঁদপুর, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে ১০ দিন ধরে অভিযান চালান।

চক্রের সদস্য মিলন মিয়াকে কুমিল্লার লাঙ্গলকোট থেকে, মকবুল হোসেনকে মুরাদনগর থেকে, মানিককে চৌরাস্তা থেকে, মতিউর রহমানকে সদর থেকে, রফিককে চাঁদপুরের কচুয়া থেকে, নয়ন সাহাকে চট্টগ্রামের অলংকার মোড় থেকে ও মনির হোসেনকে বায়েজিদ বোস্তামি এলাকা থেকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে চুরি হওয়া একটি ফোনসেট উদ্ধার করা হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম মিজানুর রহমান বলেন, চোরচক্রের ৯ সদস্য ৪ অক্টোবর শহরের চন্দ্রা রেস্ট হাউসে অবস্থান করেন। পরের দিন ভোরে চুরির ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে যান। গ্রেপ্তার করা সাতজনের মধ্যে পাঁচজনকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয়েছে।

মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী সেমন্ত ঘোষ বলেন, ওই চক্রের সাত সদস্য গ্রেপ্তার হলেও মালামাল এখনো উদ্ধার করা যায়নি। ওই মালামাল ফেরত না পেলে তাঁকে পথে বসতে হবে।

পুলিশ সুপার এসএম আশ্রাফুজ্জামান বলেন, ওই চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হবে। পালং বাজার থেকে চুরি করা মোবাইল ফোনসেটগুলে চক্রটি সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা বিক্রি করে দিয়েছে। ওই ফোনসেটগুলো উদ্ধারে অভিযান চালানো হবে।