৭ মাস বয়সের শিশুকে বিদ্যালয়ে ভর্তি!

জনতা ব্যাংকের মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সুবচনী শাখার ব্যবস্থাপক বিল্লাল হোসেন। দুই বছর আগে বিয়ে করেছেন তিনি। সাত মাস আগে তাঁর মেয়ের জন্ম হয়েছে। কিন্তু ওই মেয়েকেই তিনি উপজেলার রাউৎভোগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। অভিযোগ উঠেছে, বিল্লাল হোসেন বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি হওয়ার জন্য কৌশলে তাঁর মেয়েকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছেন।

জানা যায়, রাউৎভোগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভর্তি শিশু শ্রেণিতে রেজিস্টার খাতার ২৮ নম্বর ক্রমিকে উপজেলার রাউৎভোগ এলাকার বিল্লাল হোসেনের মেয়ে জুয়াইরিয়া নীলের নাম রয়েছে। ওই শিশুর প্রকৃত জন্মতারিখ আড়াল করে জন্ম ৯ নভেম্বর ২০১৫ দেখানো হয়েছে। বিল্লাল হোসেনের মেয়ে বিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয়টি জানতে পেরে ওই এলাকায় হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, বিল্লাল হোসেন দুই বছর আগে বিয়ে করেন। কয়েক মাস আগে তাঁর মেয়ের জন্ম হয়েছে। বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি হতে হলে ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক হতে হয়। সভাপতি হওয়ার জন্য ইতিমধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন বিল্লাল। তাই বিল্লাল হোসেন নিজের ক্ষমতা ব্যবহার করে তাঁর মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করেছেন। 

জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ টি এম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকা অবস্থায় বিল্লাল হোসেন ও এই এলাকার কাইয়ুম শেখ আমার বিদ্যালয়ে আসেন। সহকারী শিক্ষকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে জুয়াইরিয়া নীল নামের ওই শিশুকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করান তাঁরা। পরে জানতে পেরেছি ওই শিশুর বয়স মাত্র সাত মাস।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই শিশুর নাম তুলেছেন সহকারী শিক্ষিকা সাবিনা আক্তার। জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, ‘আমি ওই শিশুকে ভর্তি করিনি। আনোয়ার হোসেন নামের শিক্ষক তাকে ভর্তি করেছেন।’ আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন, ‘আমি ভর্তি করাইনি। শিক্ষিকা সাবিনা আক্তার করিয়েছেন। তবে গতকাল শনিবার ওই শিশুর নাম কেটে দিতে বললে আমি ফ্লুইড দিয়ে রেজিস্টার খাতা থেকে নামটি মুছে দিয়েছি।’

এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ওই শিশুর বাবা জনতা ব্যাংক টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সুবচনী শাখার ব্যবস্থাপক বিল্লাল হোসেন দাবি করেন, ‘আমার মেয়ের বয়স ১৫ মাস। আমার মেয়েকে আমি বিদ্যালয়ে ভর্তি করাইনি। বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়ারও আমার আগ্রহ নেই। যাঁরা আমাকে এলাকার শিক্ষিত মানুষ হিসেবে সভাপতি বানাতে চাচ্ছেন, তাঁরাই মেয়ের নামটি রেজিস্টার খাতায় লিখেছেন। এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।’

এ বিষয়ে টঙ্গিবাড়ী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আঞ্জুমান আরা বলেন, ‘সাত মাসের শিশুকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়েছে শুনে আমার লজ্জা হচ্ছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’