'আমার পোলারে টাকার জন্য তিন বন্ধু মাইরা ফালাইছে'

ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়ার তিন দিন পর সেপটিক ট্যাংক থেকে জাহিদ হাছান (১৪) নামের এক ছাত্রের লাশ গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে উদ্ধার করেছে কুমিল্লার হোমনা থানা-পুলিশ।

উপজেলার দুলালপুর চন্দ্রমনি উচ্চবিদ্যালয়ের সেপটিক ট্যাংক থেকে কিশোরের লাশ উদ্ধার করা হয়। জাহিদ ওই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল। বাবার নাম আক্তারুজ্জামান। তিনি কাপড় ব্যবসায়ী। এ ঘটনায় জাহিদের তিন বন্ধুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

জাহিদ হাছানের বাবা আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘আমার পোলারে টাকার জন্য তিন বন্ধু মিলে মাইরা ফালাইছে। আমরা একমাত্র ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’

গতকাল বুধবার রাতেই জাহিদের বাবা আক্তারুজ্জামান বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলা করেন। তারা হলো উপজেলার ভিটি কালমিনা গ্রামের মো. জিহাদ, একই গ্রামের এমদাদ হোসেন এবং মুরাদনগর উপজেলার মটকির গ্রামের খায়রুল ইসলাম।

পুলিশ ও জাহিদের পরিবার বলছে, গত সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে জিহাদ হোসেন নামের এক বন্ধুর বাসা থেকে জাহিদকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে জাহিদকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরের দিন মঙ্গলবার জাহিদের বাবা মো. আক্তারুজ্জামান থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। মঙ্গলবার একটি মুঠোফোন থেকে জাহিদের চাচা মাসুদ রানার মুঠোফোনে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। খুদে বার্তাও পাঠানো হয়।

পুলিশ আরও জানায়, গতকাল বুধবার মুঠোফোনের সূত্র ধরে দুলালপুর চন্দ্রমনি উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র খায়রুল ইসলাম ও এমদাদ হোসেন এবং দুলালপুর আলহাজ কফিল উদ্দিন দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্র জিহাদ হোসেনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে জাহিদকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করে তিন বন্ধু। তাদের দেওয়া তথ্যমতে, জাহিদের লাশ দুলালপুর চন্দ্রমনি উচ্চবিদ্যালয়ের সেপটিক ট্যাংক থেকে গতকাল রাত ১০টার দিকে উদ্ধার করে পুলিশ। আজ সকাল আটটার দিকে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রসুল আহমদ নিজামী বলেন, ‘১৫ দিন আগেই জাহিদ হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনা করে তার তিন বন্ধু জিহাদ, খায়রুল ও এমদাদ। সহজে টাকা পেতে তারা এই পথ বেছে নেয় বলে আমাকে জানিয়েছে।’