'যা আছে দে, নয়তো খুন করে ফেলব'

যুবকটির নাম ইউসুফ সরদার ওরফে বাবু (৩১)। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার সময় রিকশায় করে শাহবাগ থেকে মালিবাগে যাচ্ছিলেন, সঙ্গে ছিলেন তাঁর চাচাতো ভাই আমিনুল ইসলাম। রিকশা যখন রমনার আইইবি ভবনের সামনে পৌঁছায়, তখন আকস্মিকভাবে তিন ছিনতাইকারী এসে রিকশা থামিয়ে চাকু উঁচিয়ে বলে, ‘যা যা আছে দিয়ে দে, নয়তো খুন করে ফেলব। ’

ভুক্তভোগী ইউসুফ সরদার রোববার প্রথম আলোকে বলেন, ‘রিকশা থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে একজন ছিনতাইকারী আমাকে ফেলে দেয়। আরেকজন ছিনতাইকারী আমার পকেট থেকে টাকা বের করে নেয়। দুই থেকে তিন মিনিটের মধ্যে টাকা নিয়ে মৎস্য ভবনের দিকে দৌড় দেয়। পরে আমরা দুজন তাঁদের ধাওয়া করি। মৎস্য ভবনের সামনে রেখে আসা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা।’

এই ঘটনায় ভুক্তভোগী ইউসুফ সরদার বাদী হয়ে অজ্ঞাত ছিনতাইকারীদের আসামি করে রমনা থানায় ১৫ মার্চ মামলা করেন। এই মামলায় মহিউদ্দিন মোল্লা (৪৮) নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে রমনা থানার পুলিশ। আদালতের অনুমতি নিয়ে আসামি মহিউদ্দিনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। শনিবার মহিউদ্দিনের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুদীপ কুমার গোপ রোববার রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘যে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়, সেই সিএনজি জব্দ করা হয়েছে। সেদিন সিএনজি চালিয়েছিলেন আসামি মহিউদ্দিন মোল্লা। ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে আসামি জড়িত বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।’

আদালতকে পুলিশ প্রতিবেদন দিয়ে বলেছে, রমনা পার্কের ওই ছিনতাইয়ের ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রমনা পার্কের এই ছিনতাইয়ের ঘটনাকে চাঞ্চল্যকর মামলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ভুক্তভোগী ইউসুফ সরদারের কাছ থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা ও তাঁর মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁর চাচাতো ভাই আমিনুল ইসলামের কাছে থাকা ২৪ হাজার টাকা এবং তাঁর মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়েছে ছিনতাইকারীরা। ইউসুফ ঢাকায় টিউশনি করান।

ইউসুফ সরদার বলেন, ‘ছিনতাইকারীদের হাতে বড় বড় চাকু ছিল। টাকা-পয়সা না দিলে হত্যা করার হুমকি দেয়। চেহারা দেখে মনে হয়েছিল, এরা পেশাদার ছিনতাইকারী।’

এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুদীপ কুমার গোপ বলেন, ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তারে তিন দিন টানা অভিযান চালাচ্ছেন। যেকোনো সময় তাদের গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।