'রাত ভাসা' কৌশলে বালু-পাথর উত্তোলন

লালমনিরহাটের পাটগ্রামে নানা কৌশলে এখনো ‘বোমা মেশিন’ দিয়ে চলছে বালু ও পাথর উত্তোলন। ধরলা ও সিঙ্গিমারী নদীতে ভাসমান স্থাপনা বসিয়ে নিষিদ্ধ বোমা মেশিন দিয়ে রাতভর ওঠানো হচ্ছে পাথর ও বালু।
পাথর ও বালু তুলতে বোমা মেশিন ব্যবহার করলে ভূগর্ভের মাটির স্তর পরিবর্তনের আশঙ্কা থাকে। তাই ২০০৯ সালে হাইকোর্ট ‘বোমা মেশিন’ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
সরেজমিনে শ্রীরামপুর ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া গ্রাম এলাকায় ধরলা নদীর ভারত-বাংলাদেশ প্রবেশমুখে দেখা যায়, পাইপ বসিয়ে উচ্চ ক্ষমতার ছয় সিলিন্ডারের পাওয়ার পাম্প ব্যবহার করা হচ্ছে এই যন্ত্রে। এটা নদীর তলদেশের ১০০ থেকে ২০০ ফুট নিচের পাথর ও বালু তুলতে সক্ষম।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, নদীর দুই পাড়ের দূরত্ব সমান থাকে—এমন জায়গায় স্থাপনা তৈরি করে বসানো হয় একাধিক যন্ত্র। নৌকাতেই সাধারণত এই যন্ত্র বসানো হয়। এতে তিন বা চারজন শ্রমিক থাকেন। ঘুরে ঘুরে এই যন্ত্র চলে। যে জায়গায় সেটি চলে, সেখানে পরে গভীর খাদ হয়ে যায়। ফলে আশপাশের আবাদি জমিতে ভাঙন দেখা দেয়। যখন এ অবস্থার সৃষ্টি হয়, তখন নৌকা স্থান বদল করে।
উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের কামারেরহাট, উফারমারা, বামনদল, মাশানটারী, বানিয়াডাঙ্গী, ডাঙ্গীরপাড়; ধরলা সেতু এলাকার গুড়িয়াটারী, ছিট জহর আলী, কাউয়ামারী এবং পাটগ্রাম ইউনিয়নের চিলারবাজার, কুড়ারপাড়, বেংকান্দা এলাকায়ও পাথর ও বালু তোলা হচ্ছে।
মাশানটারী, বানিয়াডাঙ্গী, ডাঙ্গীরপাড়, বেংকান্দা এলাকার বাসিন্দা ও বালু-পাথর ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রধানত উপজেলা প্রশাসনের অভিযান থেকে রেহাই পাওয়ার জন্যই ‘রাত ভাসা’ কৌশল ব্যবহার করা হয়। শুধু রাতের বেলাই এ মেশিন চালানো হয়। উপজেলা প্রশাসন জানায়, অভিযান চলাকালে যন্ত্রটি পানিতে ফেলে রাখা হয় বা নদীর কোনো স্থানে রেখে লোকবল সরিয়ে ফেলা হয়।
ইউএনও মো. রফিুকল হক বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দুটি অভিযানে আটটি বোমা মেশিনসহ ১০টি নৌকা ধ্বংস করা হয়েছে। এ সময় একজনকে সাত দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সব বোমা মেশিন নদী থেকে উচ্ছেদ করা হবে।