অনলাইন থেকে ফ্রিজ কেনার আগে করণীয়

অনলাইন থেকে ফ্রিজ কেনার আগে একটু যাচাই-বাছাই করে নিতে হবেছবি: সংগৃহীত

দল বেঁধে দোকান ঘুরে যাচাই–বাছাই করে পছন্দের পণ্য কেনার দিন বদলেছে। মানুষ এখন ভার্চ্যুয়াল কেনাকাটায় অভ্যস্ত হয়ে গেছে। বেশ কয়েক বছর ধরে অনলাইনে কেনাকাটা করে অনেকেই স্বস্তি পাচ্ছেন। অনলাইন কেনাকাটায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পাশাপাশি পিছিয়ে নেই ইলেকট্রনিক পণ্যও। পছন্দের প্রতিষ্ঠান থেকে দরকারি জিনিসটি ফরমাশ করে ঘরে বসেই পেয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা।

অনলাইন থেকে ফ্রিজ কেনার আগে একটু যাচাই–বাছাই করে নিতে হবে। প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেরই নিজস্ব অনলাইন স্টোর রয়েছে। সেগুলো থেকে কিনলে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা কম থাকবে। ইলেকট্রনিক পণ্যগুলোর দরদাম বাজারমূল্যের সমানই থাকে। তাই তেমন দুশ্চিন্তার কারণ নেই। এরপরও বাজারের দাম সম্পর্কে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

অনলাইনে ফ্রিজ কেনার বিষয়ে কথা হয় হায়ার বাংলাদেশ লিমিটেডের হেড অব বিজনেস অ্যান্ড প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘অনলাইনে কেনাকাটা এখন মানুষের জীবনকে সহজ করে দিয়েছে। ফ্রিজের মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্যও অনলাইনে ফরমায়েশ দিয়ে কিনছেন অনেকেই। তবে এ ক্ষেত্রে কেনার আগে পণ্যের বিস্তারিত বিবরণ ভালোভাবে দেখে নিতে হবে। সঠিক তথ্য পেতে অবশ্যই পূর্ববর্তী ক্রেতাদের পর্যালোচনা (রিভিউ) ও মন্তব্যগুলো (কমেন্টস) দেখে নিলে পণ্যটির মান এবং দাম সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যাবে।’

প্রতিটি কোম্পানির নিজস্ব ওয়েবসাইট বা ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ রয়েছে। সেখান থেকে দাম এবং পণ্যের বিবরণ খুব সহজেই যাচাই করতে পারবেন। যদি অন্য কোনো সাইট থেকে নিতে চান, তবে যেসব ওয়েবসাইট থেকে বেশির ভাগ মানুষ কেনাকাটা করে চেষ্টা করুন পরিচিত সেসব থেকে কিনতে। নতুন অনেক ওয়েবসাইট প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে, নিশ্চিত না হলে সেগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো।

এ বিষয়ে মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘অনলাইনে ফ্রিজ কেনার আগে মনে রাখতে হবে, সেটি বিশ্বাসযোগ্য কি না। পণ্য পাওয়ার আগে টাকা না দেওয়াই ভালো। বিশেষ করে ফেসবুক পেজ আর নতুন ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রে কখনোই আগে পেমেন্ট করা উচিত নয়। এক্ষেত্রে ক্যাশ অন ডেলিভারিতে পণ্য কেনা বুদ্ধিমানের কাজ।’

অনেক সময় দেখা যায়, কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান বিশেষ উপলক্ষ সামনে রেখে অস্বাভাবিক মূল্যছাড় দেয়। এ রকম অস্বাভাবিক মূল্যছাড়ের বিষয়ে আগে থেকেই সাবধান হোন। সে ক্ষেত্রে সরাসরি কোম্পানির ওয়েবসাইট বা অনুমোদিত বিক্রয়কারী ওয়েবসাইটগুলো বেছে নিতে পারেন। ক্রয়কৃত পণ্যের ফিচার এবং সুবিধা সম্পর্কে সঠিক ধারণা আগে থেকেই নিতে হবে। যেন পরবর্তী কোনো ধরনের ঝামেলার শিকার হতে না হয়। কেনার আগে বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান থেকে কিনলে প্রতারিত হওয়া আশঙ্কা থাকে না।

ইলেকট্রনিকস পণ্যের ওয়েবসাইট এবং ই-কমার্স ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন সাইটে দেখা যায় পুরোনো জিনিস কেনাবেচার স্থান। এখান থেকে অনেকেই নিজের প্রয়োজনীয় ফ্রিজটি অর্ধেক দাম কিংবা নামমাত্র মূল্যে কিনতে পারেন।

রাজধানীর কাঁটাবন এলাকার বাসিন্দা ব্যাংকার ইসমত আরা এমন সাইট থেকেই গত বছর ডাবল ডোরের ফ্রিজ কিনেছেন। ইসমত জানান, ‘আমার ডাবল ডোরের এমন একটা ফ্রিজের শখ ছিল। নতুন কেনার সামর্থ্য ছিল না। পরবর্তী সময়ে যে অনলাইন সাইট থেকে কিনেছি, সেটা বিশ্বস্ত। একটি পরিবার দেশের বাইরে চলে যাবে, তাই তাদের ফ্রিজটি অর্ধেক দামে বিক্রি করে গেছেন। বেশ কিছু টাকা সাশ্রয় করেই পছন্দের ফ্রিজটি কিনতে পেরে আমি বেশ খুশি।’

ইসমত জাহানের মতো অনেক ক্রেতাই অনলাইনে এমন পুরোনো ফ্রিজ কিনে আনন্দিত হন। আবার মুদ্রার উল্টোপিঠও আছে, কেউ কেউ হয়েছেন প্রতারিত। তাই, এসব বিষয়ে একটু বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। জেনে-বুঝে সিদ্ধান্ত নিলে অনলাইন কেনাকাটায় জীবন হবে সাশ্রয়ী ও স্বস্তির।