দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের শপথ কাল
দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে কাল সোমবার দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন মো. সাহাবুদ্দিন। বেলা ১১টায় বঙ্গভবনের ঐতিহাসিক দরবার হলে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে। জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী নতুন রাষ্ট্রপতিকে শপথ পাঠ করাবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যসহ কয়েক শ বিশিষ্ট অতিথি এ আয়োজনে যোগ দেবেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। এরপর নতুন রাষ্ট্রপতি শপথ নথিতে সই করবেন।
রাষ্ট্রপতির সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান, শপথ গ্রহণের পরপরই নতুন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং বিদায়ী রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ আনুষ্ঠানিকভাবে চেয়ার বদল করবেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সাহাবুদ্দিন দেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের স্থলাভিষিক্ত হবেন। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে ৪১ দিনসহ টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ১০ বছর ৪১ দিন দায়িত্ব পালনের পর অবসরে যাচ্ছেন।
দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠানে নতুন রাষ্ট্রপতির স্ত্রী রেবেকা সুলতানা ও ছেলে আরশাদ আদনানসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্য, প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, সংসদ সদস্য, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, তিন বাহিনীর প্রধান, রাজনীতিক, কূটনীতিক, সম্পাদকসহ জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও পদস্থ বেসামরিক-সামরিক কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন ৭৩ বছর বয়সী মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি ১৯৪৯ সালের ১০ ডিসেম্বর পাবনা শহরের শিবরামপুরের জুবিলী ট্যাংকপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা শরফুদ্দিন আনছারী, মা খায়রুন্নেসা।
মো. সাহাবুদ্দিন ১৯৭৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে এলএলবি ও বিসিএস (বিচার) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, পাবনা জেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। জেলা বাকশালের যুগ্ম-সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
মো. সাহাবুদ্দিন ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন এবং একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেন। ওই সময় সামরিক স্বৈরশাসকদের রোষানলে তিন বছর জেল খাটেন। অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হন।
মো. সাহাবুদ্দিন দৈনিক বাংলার বাণীতে সাংবাদিকতাও করেছেন। তাঁর অনেক কলাম বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ছাপা হয়েছে। কর্মজীবনে তিনি জেলা ও দায়রা জজ এবং দুদকের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক এবং বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত সমন্বয়কারী হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।
সরকারি চাকরি থেকে অবসরের পর মো. সাহাবুদ্দিন হাইকোর্টে আইন পেশায় নিযুক্ত হন। ২০০১ সালের নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সাবেক এই ছাত্রনেতা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।