দেশের মহানগর ও শহরগুলোয় অস্ত্রোপচারে শিশুজন্ম বাড়ছে। মহানগরগুলোর বস্তিতে ৫৮ শতাংশ শিশুর জন্ম হচ্ছে অস্ত্রোপচারে। মহানগরে বস্তির বাইরে এই হার ৭৭ শতাংশ। অন্যান্য জেলা ও ছোট শহরে অস্ত্রোপচারে শিশুজন্মের হার ৭৫ শতাংশ।
অস্ত্রোপচারের শিশুজন্মের এই উদ্বেগজনক চিত্র পাওয়া গেছে নগর স্বাস্থ্য জরিপ ২০২১-এর প্রতিবেদনে। জরিপটি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান (নিপোর্ট)। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে জাতীয় জরিপের এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
জরিপ প্রতিবেদনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ১৫ শতাংশ প্রসবে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে। এই প্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার মাতৃমৃত্যু ও নবজাতকের মৃত্যু কমাতে সহায়তা করে। প্রয়োজন ছাড়া অস্ত্রোপচার স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে নারীর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
দেশের ১১টি সিটি করপোরেশনের বস্তির সাড়ে ১০ হাজার খানা, ১১টি সিটি করপোরেশনের বস্তির বাইরের ১৮ হাজার খানা এবং জেলা শহর ও পৌরসভার ৭ হাজার ৩৬০টি খানার ওপর এই জরিপ করা হয়েছে। জরিপের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে ২০২১ সালের ২৪ জানুয়ারি থেকে ১০ জুন পর্যন্ত। এর আগে ২০০৬ সালে ও ২০১৩ সালে এই জরিপ করা হয়েছিল। জরিপের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এনজিও-চালিত প্রতিষ্ঠানে অস্ত্রোপচারে শিশুর জন্ম কম হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি অস্ত্রোপচার হচ্ছে ব্যক্তিমালিকানাধীন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, সরকারি হাসপাতালে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ প্রসব হচ্ছে অস্ত্রোপচারে। বেসরকারি হাসপাতালে এই হার ৭৭ শতাংশ। আর্থিক বিষয় আছে বলে বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারে শিশুর জন্ম বেশি, এ বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি। তিনি বলেন, সরকারি হাসপাতালে সেবার পরিধি ও মান বাড়লে মানুষ বেসরকারি হাসপাতালে কম যাবে। তবে সরকারি হাসপাতালে জনবলের সংকট আছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সাইফুল হাসান বাদল, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. টিটো মিয়া, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এ কে এম নূর-উন নবী।