হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

সাত বছর আগে রংপুরে জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও হত্যা মামলায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) পাঁচ সদস্যের মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকবে কি না, তা ২১ সেপ্টেম্বর জানা যাবে।

আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন), আপিল ও জেল আপিলের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার রায়ের এই দিন ধার্য করেন।  

হত্যার ওই মামলায় ২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি রংপুরের বিশেষ জজ আদালত রায় দেন। রায়ে জেএমবি পাঁচ সদস্যকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন জেএমবির পীরগাছার আঞ্চলিক কমান্ডার মাসুদ রানা ওরফে মামুন ওরফে মন্ত্রী, জেএমবি সদস্য ইছাহাক আলী, লিটন মিয়া ওরফে রফিক, সাখাওয়াত হোসেন ও আহসান উল্লাহ আনসারী ওরফে বিপ্লব।

এরপর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য বিচারিক আদালতের রায়সহ নথিপত্র ২০১৭ সালে হাইকোর্টে আসে, যা ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। অন্যদিকে রায়ের বিরুদ্ধে কারাগারে থাকা চার আসামি ২০১৭ সালে পৃথক আপিল ও জেল আপিল করেন। ডেথ রেফারেন্স, আসামিদের আপিল ও জেল আপিলের ওপর আজ শুনানি শেষ হয়। পাঁচ আসামির মধ্যে আহসান উল্লাহ আনসারী পলাতক। অপর চার আসামি কারাগারে।

আদালতে আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. আহসান উল্লাহ ও মো. শামসুল ইসলাম। পলাতক এক আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. হাফিজুর রহমান খান শুনানিতে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জাকির হোসেন মাসুদ।    

পরে জাকির হোসেন মাসুদ প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের ওপর আট কার্যদিবসে আজ শুনানি শেষ হয়েছে। হাইকোর্ট রায়ের জন্য ২১ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন।

উল্লেখ্য, জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও ২০১১ সালের ২৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসেন। তিনি রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার কাচু আলুটারি গ্রামে গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে উন্নত মানের ঘাসের চাষ করতেন। ২০১৫ সালের ৩ অক্টোবর ওই গ্রামে ৬৬ বছর বয়সী কুনিওকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

ঘটনার দিন কাউনিয়া থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামে হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ২০১৬ সালের ৩ জুলাই জেএমবির আট সদস্যের বিরুদ্ধে রংপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

একই বছরের ১৫ নভেম্বর সাত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। অভিযোগ গঠনের আগে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই আসামি নিহত হন। ফলে ছয় আসামির বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া চলে। বিচারিক আদালতের রায়ে পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড হয়। অপর আসামি আবু সাঈদ খালাস পান।