পুড়িয়ে দেওয়া কার্যালয় গণচাঁদায় সংস্কার করবে উদীচী, নেবে না সরকারি সহায়তা
পুড়িয়ে দেওয়া কার্যালয় সংস্কারে সরকার কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অনুদান নেবে না উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। তারা সংস্কারের জন্য অর্থ সংগ্রহ করবে গণচাঁদা তুলে।
আজ রোববার উদীচীর একাংশের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদ সেলিম এবং সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে এক যৌথ বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেন।
ঢাকার তোপখানা সড়কের উদীচী কার্যালয়ে শনিবার আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের পর ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার ও ছায়ানট আক্রান্ত হওয়ার পরদিনই উদীচীর কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়।
আগুনে উদীচীর ৫৭ বছরের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র, বাদ্যযন্ত্র ও আসবাবের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সাংস্কৃতিক সংগঠনটি মনে করছে, স্বাধীনতাবিরোধী ধর্মান্ধ ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তি অগ্নিসংযোগে জড়িত।
আগুনে পুড়ে যাওয়া কার্যালয় সংস্কার নিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে উদীচী কখনোই কোনো ধরনের সরকারি সহায়তা বা অনুদানের জন্য নির্ভরশীল ছিল না, আজও নেই। উদীচী সব সময় সাধারণ মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে গণচাঁদা সংগ্রহ করে বেশির ভাগ কার্যক্রম পরিচালনা করে। বিশেষ কিছু উৎসব বা বড় আয়োজন ছাড়া কখনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকেও অর্থ সংগ্রহ করে না। দেশে ও বিদেশে সংগঠনের হাজারো শিল্পী কর্মী নিজেদের উপার্জন থেকে অনুদান দিয়ে নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনায় মূল ভূমিকা রাখেন। এবারও ক্ষতিগ্রস্ত কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংস্কারে উদীচীর শিল্পী কর্মীরাই মুখ্য ভূমিকা পালন করবেন।
উদীচীর নাম ব্যবহার করে কেউ আর্থিক সহায়তা চাইলে প্রতারিত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলা হয়েছে, এর দায়ভার উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদ নেবে না।
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয় এবং ছায়ানট ভবনে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের পর উদীচী কার্যালয়ে হামলার হুমকি থাকার পরও সরকার নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়। এতে বলা হয়, নিরাপত্তার কোনো ধরনের ব্যবস্থাই নেয়নি অন্তর্বর্তী সরকার বা প্রশাসন। আর এ কারণেই ১৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বিনা বাধায় অগ্নিসংযোগ করতে পারে মৌলবাদী, অন্ধকারের অপশক্তি।
এখন সুষ্ঠু তদন্ত করে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে উদীচী। হামলার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয় বিবৃতিতে।