বৈশ্বিক মহামারি চুক্তি হচ্ছে, দেশে আলোচনা নেই

কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বিশ্ববাসীর নতুন অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা হয়েছে। এসবের ভিত্তিতেই আন্তর্জাতিক চুক্তির খসড়া তৈরি হয়েছে।

করোনার টিকা দিচ্ছেন এক স্বাস্থ্যসেবাকর্মীফাইল ছবি

ভবিষ্যতে মহামারি মোকাবিলা করার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদস্যদেশগুলো চুক্তিবদ্ধ হতে যাচ্ছে। প্রায় তিন বছর কাজ করার পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে বৈশ্বিক মহামারি চুক্তির খসড়া তৈরি করা হয়েছে।

২০২৪ সালে জেনেভার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদর দপ্তরে অনুষ্ঠেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে এই চুক্তি গৃহীত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, করোনাভাইরাসজনিত রোগ বা কোভিড-১৯ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে জাতীয় বা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মহামারি মোকাবিলার প্রস্তুতি, প্রতিরোধ, রোগ শনাক্ত করা এবং জরুরি অবস্থায় কাজে নেমে পড়ার ক্ষেত্রে কতটা মারাত্মক দুর্বলতা রয়েছে।

কোভিড-১৯ মহামারি শেষ হয়েও যেন শেষ হচ্ছে না। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এই মহামারি শুরু হয়েছিল। আতঙ্ক, মৃত্যু আর অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে চারটি বছর পার করল বিশ্বের মানুষ। চার বছর পর ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এসে দেখা যাচ্ছে করোনাভাইরাসটির নতুন একটি উপধরন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। মহামারির শুরুতে যে আতঙ্ক ছিল, এখন আর তা নেই। তবে দুশ্চিন্তা পুরোপুরি শেষ হতে দেখা যাচ্ছে না।

১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর কোভিড-১৯-এর মতো এত বড় স্বাস্থ্য দুর্যোগ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে মোকাবিলা করতে হয়নি। এ ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হলে বিশ্বের দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আর এই কাজের নির্দেশনা ও সমন্বয়ের উপযুক্ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

করোনা মহামারি শুরু হওয়ার এক বছর পর ২০২১ সালের ১ ডিসেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনের বিশেষ অধিবেশনে মহামারি প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়ার বৈশ্বিক চুক্তি তৈরির সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়। চুক্তির খসড়া তৈরির জন্য আন্তর্জাতিক সমঝোতা সংস্থা (ইন্টারন্যাশনাল নেগোসিয়েশন সংস্থা—আইএনবি) প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০২২ সালের ১ মার্চ আন্তর্জাতিক সমঝোতা সংস্থার প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে এ বছর ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে।

বৈশ্বিক উপলব্ধি

২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে চীনের উহান শহরে নিউমোনিয়ায় মানুষ আক্রান্ত হতে থাকে। বিজ্ঞানীরা জানতে পারেন, নিউমোনিয়ার পেছনে আছে নতুন করোনাভাইরাস। এই ভাইরাস অন্য প্রাণী থেকে আসা। তবে কীভাবে এসেছে, তা নিয়ে বিতর্ক আছে। পরে এই ভাইরাসজনিত রোগের নাম দেওয়া হয় কোভিড-১৯। দেশে দেশে প্রতিরোধের প্রস্তুতি শেষ হওয়ার আগেই কোভিড-১৯ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। সেই থেকে বিশ্ববাসী মহামারির অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

এটা এখন স্বীকৃত যে রোগের আন্তর্জাতিক বিস্তার অর্থই হচ্ছে বৈশ্বিক হুমকি। রোগের বিস্তার জীবন, জীবিকা, সমাজ ও অর্থনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলে। দেশে দেশে রোগ প্রতিরোধ ও সেবা প্রস্তুতিতে কী পরিমাণ ঘাটতি আছে, তা দেখিয়েছে কোভিড-১৯। দেখা গেছে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সময়মতো এবং ন্যায্যভাবে সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে নানা দুর্বলতা আছে। মহামারি-সম্পর্কিত নানা পণ্য, বিশেষ করে টিকা, অক্সিজেনসামগ্রী, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী, রোগ নির্ণয় সামগ্রী ও ওষুধপথ্যের প্রাপ্যতা নিয়ে ন্যায্যতার ঘাটতি ছিল।

মহামারি থেকে এই শিক্ষা হয়েছে যে টেকসইভাবে মহামারি প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়ার জন্য গোটা সরকারব্যবস্থা ও সমগ্র সমাজব্যবস্থার যুক্ততা দরকার। এই শিক্ষাও হয়েছে যে টেকসইভাবে মহামারি প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়ার জন্য আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক, আন্ত-আঞ্চলিক সহযোগিতা, সমন্বয় ও বৈশ্বিক সহমর্মিতার গুরুত্ব অনেক। এসবের জন্য রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি, সম্পদের জোগান ও বহু পক্ষের সম্পৃক্ততা দরকার।

সংজ্ঞায় পরিবর্তন

মহামারি অনেক কিছু পাল্টে দিয়েছে। ধারণায় পরিবর্তন এসেছে, পরিবর্তন এসেছে চিন্তার জগতে। তাই বৈশ্বিক চুক্তিতে কিছু কিছু বিষয়কে নতুনভাবে বা পরিবর্তিতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। যেমন মহামারির সময় তথ্যের প্লাবন বয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি হয়েছিল। যাকে ‘ইনফোডেমিক’ বলা হচ্ছে। এই শব্দটির ব্যবহার এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই এর একটি সংজ্ঞাও দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। ইনফোডেমিক অর্থ হচ্ছে কোনো রোগের প্রাদুর্ভাবের সময় প্রচুর মিথ্যা তথ্য বা বিভ্রান্তিকর তথ্যের সমাহার। এই ধরনের তথ্যের কারণে মানুষ দ্বন্দ্বে পড়তে পারে এবং স্বাস্থ্যহানিকর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ঝুঁকি নিতে পারে।

প্যানডেমিক-রিলেটেড প্রোডাক্ট বা মহামারি-সম্পর্কিত পণ্যসামগ্রী বলতে কী বোঝায়, তা মহামারির আগে বা মহামারির শুরুর দিকে স্পষ্ট ছিল না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ তা বুঝতে পারছে। যেমন মহামারি প্রতিরোধ, মোকাবিলার প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী। এর মধ্যে আছে রোগনির্ণয় সামগ্রী, পথ্য, ওষুধ, টিকা, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী, সিরিঞ্জ, অক্সিজেন।

এ রকম আরও কিছু শব্দের ব্যাখ্যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আন্তর্জাতিক চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করেছে, যেন বিষয়গুলো নিয়ে সদস্যরাষ্ট্রগুলোর মধ্যে কোনো অস্পষ্টতা না থাকে। দেড় দশকের বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এ আলোচনা বাংলাদেশেও আছে। তারপরও বিষয়টি কী, তা পরিষ্কার করার চেষ্টা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এর অর্থ হচ্ছে: সব মানুষ প্রয়োজনের সময় পূর্ণ পরিসরে মানসম্পন্ন সেবা পাবে। এই সেবা পেতে কোনো আর্থিক কষ্টে তাকে পড়তে হবে না। স্বাস্থ্যের উন্নতিমূলক সেবা থেকে শুরু করে প্রয়োজনের সময় মানুষ প্রতিরোধমূলক সেবা, চিকিৎসা, পুনর্বাসন সেবা এবং উপসমমূলক সেবা পাবে।

স্বাস্থ্য ও মহামারির সঙ্গে সম্পৃক্ত এমন ১৩টি শব্দ বা শব্দগুচ্ছকে বিশ্ববাসীর কাছে নতুন করে উপস্থাপন করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। মূল উদ্দেশ্য এসব শব্দের অর্থের অন্তর্নিহিত তাৎপর্যে যেন কোনো অস্পষ্টতা না থাকে।

বৈশ্বিক নীতি কী হবে

মহামারি প্রতিরোধ, মোকাবিলার প্রস্তুতি ও কাজের ক্ষেত্রে জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যেসব পদ্ধতিগত ঘাটতি ও সমস্যা আছে, তা সমন্বিতভাবে ও কার্যকরভাবে দূর করার উদ্দেশ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মহামারি চুক্তি করতে যাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এই আন্তর্জাতিক চুক্তির মূলে থাকবে ন্যায্যতা ও স্বাস্থ্য অধিকার।

আর থাকবে কিছু নীতি। এ রকম ১২টি নীতির কথা খসড়ায় বলা হয়েছে। আন্তর্জাতিক চুক্তি বাস্তবায়ন করতে এই নীতিগুলো সদস্যরাষ্ট্রগুলোর জন্য নির্দেশিকার ভূমিকা পালন করবে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনে করছে।

এসব নীতির মধ্যে মানবাধিকার, মানুষের মর্যাদা, ব্যক্তির মৌলিক স্বাধীনতাগুলোকে সম্মান জানানোর কথা শুরুতেই উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনের বিধিবিধান মেনে সদস্যরাষ্ট্রগুলো স্বাধীনভাবে স্বাস্থ্যসম্পর্কিত আইন-কানুন তৈরি করবে।

খসড়া দলিলে বলা হয়েছে, মহামারি প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও কাজের কেন্দ্রে থাকবে ন্যায্যতা। ন্যায্যতা শুধু রাষ্ট্রের সীমার ভেতরকার বিষয় না, এই ন্যায্যতা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রাষ্ট্রগুলোর মধ্যেও থাকতে হবে। ভঙ্গুর অবস্থায়, প্রান্তিক অবস্থায় বা জরুরি পরিস্থিতিতে থাকা মানুষের জন্যও এই ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে হবে। ন্যায্যতার অর্থ মানুষ অব্যাহতভাবে, যথাযথ, পক্ষপাতহীন ও সময়মতো মহামারি-সম্পর্কিত পণ্য ও প্রযুক্তি, তথ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা দিতে হবে। এই সেবা হবে নিরাপদ, কার্যকর ও মানসম্পন্ন। এসব থাকবে মানুষের সামর্থ্যের মধ্যে।

নীতির আলোচনায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ক্ষেত্রে। কার্যকরভাবে মহামারি প্রতিরোধ করতে হলে, প্রস্তুতি নিতে গেলে বা মহামারির কাজ ঠিকমতো করতে হলে স্বচ্ছতার সঙ্গে, খোলামেলাভাবে ও ঠিক সময়ে সঠিক তথ্য, উপাত্ত-পরিসংখ্যান পাওয়া ও সরবরাহ করা জরুরি। এসব দরকার ঝুঁকি নিরূপণ, গবেষণা, মহামারি-সম্পর্কিত পণ্য উদ্ভাবনের জন্য। জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক গোপনীয়তা ও উপাত্ত সুরক্ষাবিধি, সনদ ও আইনের সঙ্গে সংগতি রেখে পণ্যের দাম, বাজারজাতকরণ ব্যয়, ভর্তুকি, প্রণোদনার মতো বিষয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।

স্বাস্থ্যপদ্ধতি শক্তিশালী ও টেকসই করতে রাষ্ট্রগুলো দায়বদ্ধ। এই দায়বদ্ধতা আইনগতভাবে, প্রশাসনিকভাবে ও অন্যান্যভাবে পরিমাপযোগ্য হতে হবে। পাশাপাশি প্রান্তিক বা ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।

কী আছে চুক্তিতে

মহামারির এই চুক্তিতে ধারা আছে ৩৬টি। প্রথম অধ্যায়ে আছে তিনটি ধারা। এই তিনটি ধারায় চুক্তির উদ্দেশ্য, বিভিন্ন শব্দের ব্যাখ্যা ও নীতির বিষয়গুলো বর্ণনা করা হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে আছে ১৭টি ধারা। এই ধারাগুলোতে মূলত মহামারি প্রতিরোধ, মহামারি মোকাবিলার প্রস্তুতি এবং মহামারির সময়ে কাজ কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তৃতীয় অধ্যায়ের ১৬টি ধারার মহামারি আন্তর্জাতিক চুক্তি কার্যকর ও মেনে চলার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

মূলত দ্বিতীয় অধ্যায়ের ধারাগুলোতে মহামারি মোকাবিলার বিষয়গুলো আলোচিত হয়েছে। শুরুতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ও জনস্বাস্থ্যে নজরদারি জোরদার করার বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচিত হয়েছে। বলা হয়েছে, দ্বিপক্ষীয় বা আন্তর্জাতিক দিক শক্তিশালী করার মাধ্যমে একটি দেশে অন্য দেশকে সহযোগিতা করবে। জীবজন্তু থেকে কোনো জীবাণু ছলকে মানুষে আসার সম্ভাবনা বা ঝুঁকি নজরদারি করার বিষয়গুলো জোরদার করার কথা বলা হয়েছে।

এভাবে বাকি ধারাগুলোতে এক স্বাস্থ্য (ওয়ান হেলথ), জনবল, গবেষণা, টেকসই উৎপাদন, প্রযুক্তি হস্তান্তর, সুযোগ ও সুফল-ভাগাভাগি, বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খল ও পণ্যসামগ্রী, আইন-কানুন জোরদারকরণ, ক্ষতিপূরণ, আন্তর্জাতিক সমন্বয় ও সহযোগিতা, পুরো সরকারব্যবস্থা ও পুরো সমাজব্যবস্থার যুক্ততা, যোগাযোগ ও জনসচেতনতা, বাস্তবায়ন সক্ষমতা ও সহায়তা এবং অর্থায়ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা আছে।

বাংলাদেশ কী করছে

বাংলাদেশে করোনা শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এ পর্যন্ত দেশে করোনা শনাক্ত হয়েছে ২০ লাখ ৪৬ হাজারের বেশি মানুষের। এর মধ্যে মারা গেছেন ২৯ হাজার ৪৭৭ জন। দেশের ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ টিকা পেয়েছেন। দেশে সংক্রমণ ও মৃত্যু কম বলে সরকারের পক্ষে দাবি করা হয়। অন্যদিকে নানা প্রতিবন্ধকতা থাকার পরও সরকার দেশের মানুষের জন্য পর্যাপ্ত টিকার ব্যবস্থা করতে
পেরেছে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এ জন্য সরকার প্রশংসিত হয়েছে।

চুক্তিটি চূড়ান্ত হতে ও ব্যবহারযোগ্য দলিল হতে চলেছে। তবে এ নিয়ে দেশে আলোচনা খুব একটা শোনা যায়নি। চুক্তিটি ভালো না মন্দ, এ রকম চুক্তি হলে দেশের কতটা লাভ বা ভবিষ্যৎ মহামারি মোকাবিলায় দেশ কতটা প্রস্তুতি নেবে, কীভাবে নেবে—এসব নিয়ে কোনো কথা বলতে শোনা যায়নি। ২৬ ডিসেম্বর যোগাযোগ করা হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের শীর্ষস্থানীয় তিনজন কর্মকর্তা এ বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি। তাঁরা বলেছেন, এ রকম দলিল নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগে কোনো আলোচনা হয়নি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে কাজ করার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা আছে, এমন দুজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, এ ধরনের খসড়া দলিল জেনেভার বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে পাঠানো নয়। সরকার প্রয়োজন মনে করলে দেশে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেয়। তবে মহামারি চুক্তির খসড়া নিয়ে কোনো আলোচনা হতে তাঁরা শোনেননি।

জনস্বাস্থ্যবিদ মুশতাক হোসেন বলেন, খসড়া নিয়ে দেশে আলোচনা হওয়া দরকার। তাহলে মানুষ জানতে পারত আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কী হচ্ছে। তাতে দেশের অবস্থাও মানুষের কাছে স্পষ্ট হতো।