জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক পাওয়ার ৫০ বছর পূর্তি এবার উৎসবের আমেজে পালন করবে সরকার। এ জন্য আগামী ২৩ মে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে।
সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় কর্মসূচিগুলো নির্ধারণ করা হয়েছে।
নোবেলজয়ী ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী জঁ ফ্রেডেরিক জুলিও কুরির নামে বিশ্ব শান্তি পরিষদ ১৯৫৯ সালে জুলিও কুরি পদক চালু করে। বাঙালি জাতির মুক্তি আন্দোলন ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বিশ্ব শান্তি পরিষদ ১৯৭২ সালের ১০ অক্টোবর জুলিও কুরি পদকের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ঘোষণা করে। এরপর ১৯৭৩ সালের ২৩ মে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত এশীয় শান্তি সম্মেলনের এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পরিষদের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল রমেশচন্দ্র বঙ্গবন্ধুকে ‘জুলিও কুরি’ পদক প্রদান করেন। স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো রাষ্ট্রনেতার এটিই ছিল প্রথম আন্তর্জাতিক পদক লাভ। এ বছর এই পদক পাওয়ার ৫০ বছর পূর্তি হচ্ছে।
এ উপলক্ষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে আলোচনা সভা আয়োজন করা হবে। এ জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে ‘আলোচনা সভা আয়োজন উপকমিটি’ গঠন করা হয়েছে। জাতীয় পর্যায়ে আলোচনা সভার পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এ জন্যও আলাদা কমিটি করা হয়েছে। এ ছাড়া পুস্তিকা বা পকেট বই তৈরি, ছাপা সংবাদপত্র এবং ইলেকট্রনিক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রচার, বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি শান্তি পদক পাওয়ার ছবিসংবলিত স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশসহ আরও কিছু কর্মসূচি পালন করা হবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভার কার্যবিবরণী অনুযায়ী, দেশব্যাপী আয়োজিত সব অনুষ্ঠানের জন্য একই ডিজাইনের লোগো ও ব্যানার তৈরি করতে হবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশন বা দূতাবাসগুলোতেও আলোচনা সভা, ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হবে।
এ ছাড়া দেশের সব মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও উপাসনালয়ে সুবিধাজনক সময়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা, দেশব্যাপী স্বেচ্ছায় রক্তদান ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে চিত্রাঙ্কন ও কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে হবে। জাতীয় কর্মসূচির সঙ্গে মিল রেখে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হবে।
বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি শান্তি পদক পাওয়ার ৫০ বছর পূর্তি যথাযোগ্য মর্যাদায় ও উৎসবের আমেজে উদ্যাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দপ্তরগুলো তাদের নিজস্ব বাজেট থেকে এই অনুষ্ঠানের যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করবে। নিজস্ব বাজেটের বাইরে বাড়তি টাকার প্রয়োজন হলে অর্থ বিভাগের সম্মতি নিয়ে প্রয়োজনীয় অর্থের সংকুলান করা যেতে পারে বলেও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কার্যবিবরণীতে উল্লেখ করা হয়।