ফিলিস্তিনে নির্বিচার মুসলিম গণহত্যা বন্ধের দাবিতে মহাসমাবেশ

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে মহাসমাবেশ করে আধিপত্যবাদবিরোধী মুসলিম ঐক্য মঞ্চ।রাজধানীর প্রেসক্লাবের সামনে। ২৬ এপ্রিলছবি: প্রথম আলো

ফিলিস্তিনে নির্বিচার মুসলিম গণহত্যা বন্ধ, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন, অবিলম্বে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি, গণহত্যায় জড়িত ইসরায়েলিদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে মহাসমাবেশ করেছে আধিপত্যবাদবিরোধী মুসলিম ঐক্য মঞ্চ।

শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাব ও আশপাশ এলাকায় এ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে পল্টন হয়ে দৈনিক বাংলা মোড় পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ভারতের মুসলিমদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধ, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়া ও বাংলাদেশে ইসরায়েলি পণ্য ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হয়। এসময় তাঁরা ইসরায়েলবিরোধী নানা ম্লোগান দেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, মুসলমানদের ওপর ইসরায়েলের চরম বর্বরতা ও নৃশংসতা আর সহ্য করা যায় না। ইসরায়েলের এ বর্বরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করে বক্তারা বলেন, যত দিন প্রাণ থাকবে, ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মুসলিমদের পক্ষে কথা বলা বন্ধ করা হবে না।

বক্তারা বলেন, ইসরায়েলের আধিপত্য এখন আর শুধু মধ্যপ্রাচ্যে সীমাবদ্ধ নয়; দক্ষিণ এশিয়াতেও এর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চলছে। ভারতের মোদি সরকার দক্ষিণ এশিয়ায় ইসরায়েলি ধাঁচের আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে। এর অংশ হিসেবে সম্প্রতি ভারতের লোকসভায় মুসলিমবিরোধী ও অসাংবিধানিক ওয়াক্‌ফ বিল পাস হয়েছে। লোকসভায় এই বিল বাতিল ঘোষণা করার দাবি জানান তাঁরা।

সমাবেশে বক্তারা রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিষয়ে বলেন, পতিত স্বৈরাচারী সরকার রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ব্যবসা করেছে। তারা এ সমস্যার বাস্তবসম্মত কোনো সমাধান করেনি। তবে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তার আন্তর্জাতিক অবস্থান কাজে লাগিয়ে রোহিঙ্গাদের জন্মভূমিতে ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছেন।

সমাবেশে বক্তব্য দেন সৈয়দ মুহাম্মদ হাসান আজহারী, মাওলানা সাইফুল ইসলাম বারী, শফিক মুজাদ্দেদী, মুহাম্মদ ইমরান হুসাইন তুষার প্রমুখ। সমাবেশে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আবুল কাশেম ফজলুল হক।

মহাসমাবেশে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। এতে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে পল্টন হয়ে দৈনিক বাংলা মোড় পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়
ছবি: প্রথম আলো

ঘোষণাপত্রে বলা হয়, জুলাই অভ্যুত্থানের মূল স্পিরিট ছিল জালেমের বিরুদ্ধে মজলুম হিসেবে দাঁড়িয়ে যাওয়া, আধিপত্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করা। জুলুমের বিরুদ্ধে, আধিপত্যের বিরুদ্ধে জুলাই অভ্যুত্থানকে স্মরণ ও ধারণ করে আগামীর বাংলাদেশকে পুনর্গঠন করা হবে। ফিলিস্তিন, ভারত ও আরাকানে মজলুম মুসলমানদের পক্ষে বিশ্ব জনমত গঠন করার আহ্বান জানান তাঁরা।

মহাসমাবেশে পীর শাহ আহসানুজ্জামান মোনাজাত পরিচালনা করেন। এই মোনাজাতের মধ্য দিয়ে মহাসমাবেশ শেষ হয়।