পূর্বাচলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দ পেতে দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে করা পৃথক তিন মামলায় ২৭ নভেম্বর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আজ রোববার রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আবদুল্লাহ আল মামুনের আদালত রায় ঘোষণার এই দিন ধার্য করেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের সহকারী আরিফুল ইসলাম জানান, পৃথক এই তিন মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ২৭ তারিখ দিন ধার্য করা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মঈনুল হাসান বলেন, ‘আমরা আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা দাবি করেছি। এই তিন মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।’
তিন মামলার গ্রেপ্তার একমাত্র আসামি রাজউকের সদস্য খোরশেদ আলমের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আইনজীবী মো. শাহীনুর ইসলাম। যুক্তিতর্কে শুনানিতে আসামিকে নির্দোষ দাবি করেন এই আইনজীবী। তবে এই মামলায় অন্য আসামিরা পলাতক থাকায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করার সুযোগ পাননি।
এর আগে ১৭ নভেম্বর পৃথক এই তিন মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করেন আদালত। পৃথক তিন মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক সিনিয়র সচিব পূরবী গোলদারসহ ১২ জন, শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১৭ জন এবং শেখ হাসিনা, তাঁর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের বেশ কয়েকজনকে তিনটি মামলাতেই আসামি করা হয়েছে।
এর আগে প্লট দুর্নীতির মামলায় গত ৩১ জুলাই শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানার পরিবারের বিরুদ্ধে পৃথক ছয় মামলায় দুই পরিবারের সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার দুই বিশেষ জজ আদালত। শেখ হাসিনা ও তাঁর ছেলে–মেয়ে ছাড়া তাঁর পরিবারের অন্য অভিযুক্ত সদস্যরা হলেন বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক (ববি)।
মামলায় শেখ হাসিনা পরিবারের বাইরে অভিযুক্ত ১৬ জন হলেন জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, গণপূর্তের তৎকালীন সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিয়া, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য কবির আল আসাদ, সদস্য তন্ময় দাস, সদস্য নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার।
প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে পৃথক ছয়টি মামলা করে দুদক। মামলার অভিযোগে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। তাঁরা বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রাস্তার ছয়টি প্লট তাঁদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।