অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলার রায় ৩০ মার্চ

অনন্ত বিজয় দাশ
ফাইল ছবি

সিলেটের বিজ্ঞানলেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ (৩২) হত্যা মামলার রায় ৩০ মার্চ নির্ধারণ করেছেন বিচারক। আজ সোমবার দুপুরে পলাতক তিন আসামির যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য করেন।

এর আগে ১০ মার্চ (বৃহস্পতিবার) বিচারক আসামিপক্ষের যুক্তিতর্কের অবশিষ্ট অংশ শুনানি শেষে পলাতক তিন আসামির যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য সোমবার শুনানির তারিখ নির্ধারিত হয়।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ মনির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, সোমবার অভিযোগপত্রভুক্ত পলাতক আসামি আবুল হোসেন, ফয়সল আহমদ ও মামুনুর রশিদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন হয়। এরপর সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনাল সিলেটের বিচারক ৩০ মার্চ রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। তিনি বলেন, ‘মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আমরা যথেষ্ট সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করতে পেরেছি। আশা রাখাছি তাঁরা সর্বোচ্চ সাজা পাবেন।’

যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে অংশ নেন সিলেট সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিশেষ কৌঁসুলি (পিপি) মুমিনুর রহমান। বাদীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে অংশগ্রহণ করেন সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম, সাবেক সরকারি কৌঁসুলি মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সমর বিজয় শেখর ও মোহাম্মদ মনির উদ্দিন। পলাতক আসামির পক্ষে মামলা পরিচালনায় অংশ নেন সাব্বির আহমদ ও ইমরান আহমদ।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১২ মে সিলেট নগরের সুবিদবাজারে নুরানি আবাসিক এলাকার নিজ বাসার সামনে খুন হন অনন্ত। পেশায় ব্যাংকার অনন্ত বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি ‘যুক্তি’ নামে বিজ্ঞানবিষয়ক একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। এ ছাড়া বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

হত্যাকাণ্ডের পর অনন্তের বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ বাদী হয়ে সিলেট বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাতনামা চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এতে বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী’ পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে বলে অভিযোগ করা হয়।

মামলাটি পুলিশ থেকে অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তর করা হয়। সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী তদন্ত করে ২০১৭ সালের ৯ মে সম্পূরক অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন। এতে সন্দেহভাজন আটক ১০ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে ছয়জনকে অভিযুক্ত করা হয়। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ২৯ সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে।

অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আবুল হোসেন (২৫), খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ (২৭), সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বীরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ (২৫), কানাইঘাটের পূর্ব ফালজুর গ্রামের মান্নান ইয়াইয়া ওরফে মান্নান রাহী ওরফে এ বি মান্নান ইয়াইয়া ওরফে ইবনে মঈন (২৪), কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ (২৫) ও সিলেট নগরের রিকাবীবাজার এলাকায় বসবাসকারী সাফিউর রহমান ওরফে ফারাবী সাফিউর রহমান (৩০)। আসামিদের মধ্যে ২০১৭ সালের ২ নভেম্বর মান্নান হঠাৎ অসুস্থ হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ছাড়া আবুল হোসেন, ফয়সাল আহমদ ও মামুনুর রশীদ পলাতক।