অভিমানে বাড়ি ছেড়েছিলেন ৭ বছর আগে, সড়কে প্রাণ হারিয়ে ফিরলেন লাশ হয়ে

লাশ
প্রতীকী ছবি

স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে সাত বছর আগে বাড়ি ছেড়েছিলেন মো. ইব্রাহীম আলী (৬৫)। একা থাকতেন ভাড়া নেওয়া একটি দোকানঘরে। স্বজনদের নানা চেষ্টা আর অনুরোধেও ফেরেননি নিজ সংসারে। অবশেষে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়ে লাশ হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন তিনি।

গতকাল শনিবার রাতে নিহত ইব্রাহীমের নিথর দেহ বাড়িতে নিয়ে এলে কান্নার রোল পড়ে স্বজনদের মধ্যে। দীর্ঘদিন স্ত্রী-সন্তান ও স্বজনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা ইব্রাহীমের এমন মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে গ্রামজুড়ে।

এর আগে গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে পঞ্চগড় সদর উপজেলার খানপুকুর এলাকায় পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়ক পার হতে গিয়ে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় মারা যান ইব্রাহীম আলী। দুর্ঘটনাস্থলের পাশেই সড়কের ধারে একটি দোকানঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন তিনি।

নিহত ইব্রাহীম আলী পঞ্চগড় সদর উপজেলার পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের ডুডুমারী-ফকিরপাড়া এলাকার বাসিন্দা। পেশায় তিনি একজন মৌসুমি খাদ্যশস্য ব্যবসায়ী ছিলেন। আজ রোববার সকালে বাড়ি থেকে তাঁর লাশ আবারও নিয়ে যাওয়া হয় খানপুকুর এলাকায়। দীর্ঘ সাত বছর ধরে সেখানে বসবাস করায় সকাল নয়টায় খানপুকুর জামে মসজিদ মাঠে তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাঁর লাশ সদর উপজেলার ডুডুমারী-ফকিরপাড়া এলাকায় আনা হয়। সেখানে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে সংসার ছিল ইব্রাহীমের। ২০১৪ সালে পারিবারিক কলহের জেরে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। স্ত্রী-সন্তানসহ প্রতিবেশীরা তাঁকে বারবার বাড়িতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিলেন। মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। দুই ছেলে বেসরকারি চাকরি করেন। তাঁদের আয়ে সংসার চলে।

খানপুকুর এলাকার বাসিন্দা মো. সোলায়মান আলী বলেন, সাত বছর ধরে তাঁদের এলাকায় বসবাস করায় সবার সঙ্গে ইব্রাহীমের সুসম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। এ কারণে এখানে তাঁর জানাজা হয়েছে।

বোদা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কেরামত আলী আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির ছোট ছেলে হারুন অর রশীদ সড়ক দুর্ঘটনা আইনে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে পঞ্চগড় সদর থানায় মামলা করেছেন। দুর্ঘটনাস্থল থেকে মোটরসাইকেলটি জব্দ করা হয়েছে।