অসময়ের বৃষ্টিতে আমচাষি ও কৃষকের মুখে হাসি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মানচিত্র

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় প্রায় দুই মাস পর রোববার রাতের ২২ মিলিমিটারের বৃষ্টি হয়েছে। অসময়ের এ বৃষ্টি স্বস্তি এনে দিয়েছে আমচাষি ও বোরো ধানের কৃষকের মনে। এর আগে সর্বশেষ বৃষ্টি হয়েছিল ৫ ফেব্রুয়ারি।

আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের (আম গবেষণাকেন্দ্র) মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান বলেন, এ বৃষ্টি আমগাছের জন্য টনিকের মতো কাজ করবে। রাতের বৃষ্টির পর দিনটি রোদ্রোজ্জ্বল থাকায় সোনায় সোহাগা হয়েছে। আমগাছের গোড়া যেমন পানি পেয়েছে, তেমনি গোটা গাছের ধুলাবালি পরিষ্কার হয়েছে। দূর হয়েছে হপার পোকাও। বোঁটায় পানি পাওয়ায় রোধ হবে ঝরে পড়াও।

শিবগঞ্জ উপজেলার আমচাষি শামীম খানও বৃষ্টি হওয়ায় খুশি। তিনি বলেন, এবার মুকুল কম। আমের সবচেয়ে বড় এলাকা শিবগঞ্জে ফলনও কম। দীর্ঘ খরার কারণে আমের মুকুল ঝরে পড়ছিল। এ কারণে বাগান বেচাকেনা থমকে ছিল। অথচ এই সময়ের মধ্যে বেচাকেনা শুরু হয়ে যায়। এর মধ্যে রোববার রাতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। এখন বাগান কেনাবেচা শুরু হয়ে যাবে। এ কারণে এ বৃষ্টি আমচাষিদের মনে স্বস্তি এনে দিয়েছে।

দীর্ঘ খরার কারণে আমবাগানে সেচের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল বলে জানিয়েছেন শিবগঞ্জের আরেক আমচাষি আহসান হাবিব। তিনি বলেন, এ বৃষ্টির কারণে আর সেচ লাগবে না। এতে অর্থনৈতিকভাবে লাভবানও হয়েছেন আমচাষিরা। মনে হয়েছে, বৃষ্টির ফোঁটা মধু হয়ে ঝরেছে আমগাছে।

বৃষ্টি হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বরেন্দ্র এলাকার আমচাষি দুরুল হোদা। তিনি বলেন, সেচ দিতে তাঁর অনেক টাকা খরচ হতো। সেটা থেকে বেঁচে গেছেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নাচোল উপজেলার টুনু পাহান (৪৫) বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) বরেন্দা গ্রামের একটি গভীর নলকূপের অপারেটর। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বোরো ধানের জমিতে কার আগে কে পানি লিবে, এ লিয়া ছিল কৃষকদের মধ্যে হুড়াহুড়ি। খালি হামার ডিপে (গভীর নলকূপ) লয়, আশেপাশের সব ডিপেই ছিল একই অবস্থা। অখন ধানে শীষ ফুটার সময়। পানির খুবই দরকার। এ সময় আকাশের পানিতে কী যে ভালো হইল! চিন্তা থাকি বাঁচনু।’

জানতে চাইলে জেলা কৃষি কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, রোববার রাতে জেলায় বৃষ্টি হয়েছে গড়ে ২২ মিলিমিটার। এতে আম ও বোরোর জন্য দারুণ উপকার হবে।