অস্ত্র ফেরত না দেওয়ায় সালথায় দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২৫

সংঘর্ষের সময় দুই পক্ষের অন্তত আটটি বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল রাতে সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নে
ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের সালথায় দেশীয় অস্ত্র ঢাল ফেরত না দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার রাত ১০টা থেকে দিবাগত রাত ২টা পর্যন্ত উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের মাদ্রাসা গট্টি, বালিয়া গট্টি ও কানাইড় গ্রামে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে।

পরে পুলিশ গুলি, কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ফাটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে দুই পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ সময় দুই পক্ষের অন্তত আটটি বাড়ি ও একটি দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। বর্তমানে ওই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারিতে গট্টি ইউপি নির্বাচন শেষ হওয়ার পর থেকে সাবেক ইউপি সদস্য কুদ্দুছ মাতুব্বর ও বর্তমান ইউপি সদস্য পারভেজ মাতুব্বরের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর মধ্যে কিছু দিন আগে কুদ্দুছ মাতুব্বরের সমর্থক রেজাউল বর্তমান ইউপি সদস্য পারভেজ মাতুব্বরের দলে যোগ দেন। দল থেকে চলে যাওয়া রেজাউলের কাছে কুদ্দুছ মাতুব্বরের তিনটি ঢাল ছিল। সম্প্রতি কুদ্দুছ ঢালগুলো ফেরত চাইলেও রেজাউল সাড়া দেননি। এ নিয়ে দুই থেকে তিন দিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।

গতকাল সন্ধ্যায় কুদ্দুছ মাতুব্বরের অনুসারী নুরু মাতুব্বরসহ আরও কয়েকজন মাদ্রাসা গট্টি মোড় থেকে রেজাউলের ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক আটক করেন। এ সময় তাঁরা রেজাউলকে ঢাল ফেরত দিয়ে ইজিবাইক নিয়ে যেতে বলেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ইজিবাইক উদ্ধার করে রেজাউলকে ফেরত দেয়।

এ খবর দুই পক্ষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে রাত ১০টার দিকে কানাইড় ও মাদ্রাসা গট্টি এলাকায় দুই সমর্থকেরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। রাত ২টা পর্যন্ত মাদ্রাসা গট্টি, বালিয়া গট্টি ও কানাইড় গ্রামে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। এ সময় স্থানীয় মান্নান মাতুব্বর, সোহরাব রাজা, জলিল মা, আহমেদ শেখসহ আটজনের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এ ছাড়া চালতাচলার মোড়ে আহমেদ শেখের দোকানেও ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়ে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় দুই পক্ষের আহত ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ১০ জনকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে কুদ্দুছ মাতুব্বর ও পারভেজ মাতুব্বরের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

জানতে চাইলে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুজ্জামান বলেন, গতকাল রাতে সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কয়েক দফা চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এ সময় সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে শর্টগানের ২৫টি গুলি, ৩ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ১টি সাউন্ড গ্রেনেড ফাটানো হয়েছে। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আজ সোমবার বেলা তিনটা পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।