আওয়ামী লীগে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে প্রশাসন

ফরিদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ নেতা বিপুল ঘোষ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে স্থানীয় হাসিবুল হাসান লাবলু সড়কে
ছবি: প্রথম আলো

‘ফরিদপুর আওয়ামী লীগের মধ্যে একটা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে। প্রশাসনের মধ্যে কিছু লোক এই ত্রাসের কাজে সহযোগিতা করছেন।’

এ অভিযোগ করেছেন ফরিদপুর আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা বিপুল ঘোষ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ফরিদপুরে আয়োজিত এক সভায় তিনি এই বক্তব্য দেন।

মহান বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল বিকেলে এ সভার আয়োজন করে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ। স্থানীয় হাসিবুল হাসান লাবলু সড়কে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে এ সভা হয়।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিপুল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘আমি বলতে চাই প্রশাসন, আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। সরকারের বেতন খান। রাজনীতি করার জন্য আপনাদের এখানে নিয়োগ করা হয় নাই। ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের মধ্যে আপনারা যে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছেন, তার জবাব আপনাদের দিতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিপুল ঘোষ বলেন, ‘আগে ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের গ্রুপ ছিল দুইটা। একটি মোশাররফ ভাইয়ের গ্রুপ, আরেকটা অ্যান্টি মোশাররফ ভাই গ্রুপ। আজ দল হয়েছে অসংখ্য, গ্রুপ হয়েছে অসংখ্য।’

দলে একাধিক গ্রুপ হওয়ার জন্য ফরিদপুরের প্রশাসনকে দায়ী করে বিপুল ঘোষ বলেন, ‘আপনারা (প্রশাসন) সাবধান হইয়া যান। এই জনগণ রুখে দাঁড়ালে আপনাদের পালানোর আর জায়গা পাবেন না, কোথাও আপনাদের খুঁইজা পাওয়া যাবে না। সুতরাং আপনারা সাবধান, আপনারা হুঁশিয়ার হইয়া যান।’

এ সভায় সভাপতিত্ব করে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক। বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ঝর্না হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম সেলিম, দপ্তর সম্পাদক অনিমেষ রায়, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামচুল চৌধুরী, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি আক্কাস হোসেন প্রমুখ।

আওয়ামী লীগ নেতা বিপুল ঘোষের বক্তব্যের ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা বলেন, ‘উনি (বিপুল ঘোষ) বোধকরি তাঁর নিজস্ব কোনো ব্যক্তিগত নেচিবাচক ধারণা থেকে এ জাতীয় কথা বলেছেন। এটি সম্পূর্ণভাবে তাঁর নিজস্ব বক্তব্য।’ সুবল সাহা বলেন, এ বক্তব্যের দায় জেলা আওয়ামী লীগ নেবে না। আওয়ামী লীগ একটি নিয়ম-শৃঙ্খলার দল। এ দল করতে হলে নিয়ম–শৃঙ্খলা মেনে করতে হবে। দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে না জানিয়ে, কোনো পরামর্শ না করে হঠাৎ কোনো সভা আহ্বান করা এবং এ জাতীয় বক্তব্য দেওয়া কোনো অবস্থানেই কাম্য হতে পারে না।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দাবি করেন, প্রশাসন ও ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়নি। প্রশাসনের কর্মকাণ্ডে তাঁরা সন্তুষ্ট।