আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টি কোনো জোটের সঙ্গে যুক্ত হবে না

জাতীয় পার্টির মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির বর্ধিত সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন দলটির মহাসচিব মুজিবুর হক। শনিবার বিকেলে জেলা পরিষদ ভবন মিলনায়তনে
ছবি: প্রথম আলো

জাতীয় পার্টি (জাপা) আগামী নির্বাচনে কোনো জোটের সঙ্গে যুক্ত হবে না বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক ওরফে চুন্নু। তিনি বলেন, দুর্নীতি ও দুঃশাসন থেকে দেশের জনগণকে মুক্তি দিতে জাতীয় পার্টির বিকল্প নেই। তাই আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে তাঁর দল।

আজ শনিবার বিকেলে মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদ ভবনের মিলনায়তনে জেলা জাতীয় পার্টির বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন দলটির মহাসচিব।

সভার শুরুতে ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতা দলের সাংগঠনিক ব্যর্থতাসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। এ সময় তৃণমূলের এক নেতার বক্তব্যে উপস্থিত নেতা–কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে অন্য একটি রাজনৈতিক দল খুঁজছে মন্তব্য করে জাপা মহাসচিব বলেন, এই দুই দলই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। একমাত্র জাতীয় পার্টি হলো তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠিত। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন চারবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। আর আওয়ামী লীগ ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চার লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। দেশের মানুষ ভালো না থাকলেও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ভালো আছেন।

বর্তমান পদ্ধতিতে নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন মুজিবুল হক। তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রাইভেট সেক্টর উন্নতির পেছনে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অবদান ভোলার নয়। পোশাকশিল্প ও ওষুধশিল্পে এত উন্নতির পেছনে তাঁর ভূমিকা বেশি ছিল।

জাপা মহাসচিব আরও বলেন, যাঁরা ঘুষ খেয়ে, দুর্নীতি করে বিদেশে টাকা পাচার করেছেন, তাঁরা যদি ৭ শতাংশ ট্যাক্স পরিশোধ করেন, তাহলে সেই টাকা হালাল করতে পারবেন বলে এই বাজেটে বলা হয়েছে। অথচ দুর্নীতি দমন ও মানি লন্ডারিং আইনে টাকা পাচার করলে যাবজ্জীবন জেলের বিধান রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। দেশে বর্তমানে পাঁচ কোটি মানুষ বেকার—এই নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের কোনো মাথাব্যথা নেই।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জেলা শাখার সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ আবদুল মান্নানের সভাপত্বিতে ও জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হাসান সাঈদের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব লিয়াকত হোসেন, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, জহিরুল ইসলাম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল আলম, দলের ভাইস চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান খান, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সাধারণ সম্পাদক মো. বেলাল হোসেন, জাপার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হেলাল উদ্দিন, হুমায়ুন খান, দপ্তর সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, মাসুদুর রহমান, কেন্দ্রীয় শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ সোবহান, যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম প্রমুখ।