আদালতে স্বীকারোক্তি সিলেটে আরিফুল হত্যা মামলার প্রধান আসামির

‌সিলেটের দ‌ক্ষিণ সু‌রমা সরকা‌রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আরিফুল ইসলাম হত্যা মামলার প্রধান আসামি শামসুদ্দোহা সাদীকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি
প্রথম আলো

সিলেটের দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজের ছাত্র আরিফুল ইসলাম (১৮) হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার মূল অভিযুক্ত শামসুদ্দোহা সাদী (২০) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার দিকে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-২ আদালতের বিচারক মো. সুমন ভূঁইয়ার আদালতে অভিযুক্ত আসামি ১৬৪ ধারায় এ জবানবন্দি দেন।

২১ অক্টোবর কলেজের ভেতরে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আরিফুল ইসলাম ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছিলেন। এ ঘটনায় তাঁর চাচা শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ২২ অক্টোবর দক্ষিণ সুরমা থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা পাঁচ-সাতজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। হত্যা মামলাটি ছায়া তদন্ত করে গত মঙ্গলবার রাতে কুষ্টিয়া থেকে শামসুদ্দোহা সাদীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত ব্যক্তি গ্রেপ্তারের পর দক্ষিণ সুরমা থানায় করা মামলাটি গতকাল বুধবার পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, আজ বিকেল পাঁচটার দিকে শামসুদ্দোহা সাদী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এ সময় তিনি আদালতকে বলেন, ‘জুনিয়র-সিনিয়র’ বিরোধের জেরেই আরিফুলকে ছুরিকাঘাত করেছিলেন। তাঁরা একই কলেজে পড়লেও শামসুদ্দোহা আরিফুলের বড়। জ্যেষ্ঠ-কনিষ্ঠ নিয়ে আরিফুলের সঙ্গে বিরোধ ছিল শামসুদ্দোহার। এরই জেরে ২১ অক্টোবর কলেজে আসার পর আগে থেকেই কলেজে অবস্থান করা শামসুদ্দোহা আরিফুলের ঊরুতে ছুরিকাঘাত করেন। এরপর পালিয়ে যান তিনি।

আরিফুল হত্যা ঘটনার পর থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত কলেজে পাঠদান বন্ধ ছিল। ঘটনার মূল অভিযুক্ত শামসুদ্দোহা গ্রেপ্তারের পর গতকাল থেকে কলেজে আবার পাঠদান শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ।

এদিকে হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত শামসুদ্দোহাকে আদালতে আনার খবরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হন। তাঁরা শামসুদ্দোহার ফাঁসির দাবি জানিয়ে স্লোগান দেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে।

এর আগে আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরের মিরাবাজার এলাকায় সিলেট জেলা ও মহানগর সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা নিজ কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিং করেন। এ সময় তিনি বলেন, আজ সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে শামসুদ্দোহাকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালিয়েছে সিআইডি। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। দক্ষিণ সুরমা উপজেলার সিলাম হাজীপুর এলাকার একটি ডোবা থেকে ছুরিটি উদ্ধার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সুজ্ঞান চাকমা বলেন, নিহত আরিফুল ও শামসুদ্দোহা সাদী ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত থাকলেও হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি রাজনৈতিক ছিল না বলে জানিয়েছেন শামসুদ্দোহা সাদী। জিজ্ঞাসাবাদে শামসুদ্দোহা বলেছেন, ‘সিনিয়র-জুনিয়র’ বিরোধের জেরে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটেছে এবং এতেই আরিফুলের মৃত্যু হয়েছে। মামলার অপর অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে বলে জানান সুজ্ঞান চাকমা।

এদিকে আরিফুল হত্যা ঘটনার পর থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত কলেজে পাঠদান বন্ধ ছিল। ঘটনার মূল অভিযুক্ত শামসুদ্দোহা গ্রেপ্তারের পর গতকাল থেকে কলেজে আবার পাঠদান শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ মো. শামছুল ইসলাম।