আদালত অবমাননার দায়ে ওসির ১ টাকা অর্থদণ্ড

আদালত
প্রতীকী ছবি

বারবার সমন পাঠানোর পরও মামলার বাদী হয়ে আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় পাবনার আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলীকে এক টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান এ আদেশ দেন।

জরিমানার এ অর্থ অনাদায়ে আদালতের কার্যক্রম চলাকাল পর্যন্ত কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। তবে ওসি রওশন আলী জরিমানার এক টাকা পরিশোধ করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ইসমত আরা বলেন, ওসি রওশন আলী একটি মামলার বাদী। বাদীর সাক্ষী দিতে আসতে বারবার সমন পাঠানো হলেও ওসি রওশন আলী অনুপস্থিত থেকেছেন। বারবার ক্ষমাও চেয়েছেন। এভাবে তো বিচার কার্যক্রম এগোতে পারে না। তাই ন্যায়বিচারের স্বার্থে আদালত ওসিকে এ দণ্ড দিয়েছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, অন্য আরেকটি মামলার ক্ষেত্রেও আদালতের সমন অবজ্ঞা করেছিলেন ওসি রওশন। এ জন্য তিনি পরে লিখিতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আদালত তখন তাঁকে ক্ষমা করেন। আজও আদালতে হাজির হয়ে ওসি ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তবে আদালত মনে করেন, সাক্ষী আদালতের ক্ষমার সুযোগকে অপব্যবহার করেছেন। তা ছাড়া সাক্ষীর লিখিত ব্যাখ্যা প্রসিডিং থেকে বাঁচার কৌশল ছিল, হৃদয় থেকে অনুতপ্ত নন। আদালতের উদারতা ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে এ দণ্ড দেওয়া হয়।

আদালত সূত্রে আরও জানা যায়, রওশন আলী আগে পাবনা জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) কর্মরত ছিলেন। ২০১৮ সালের ৬ আগস্ট ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলন নিয়ে ফেসবুকে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে এক যুবককে আটক করে তখন তিনি একটি মামলা করেন। মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আদালত তদন্ত কর্মকর্তাসহ অন্যদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। ‘ইনফরমেন্ট’ সাক্ষী হিসেবে রওশন আলীকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য পরপর ছয়বার সমন পাঠানো হয়। কিন্তু তিনি আদালতে আসেননি। পরে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে রওশন আলীর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে আদালতের সমনের ছবি পাঠান। এতেও কোনো উত্তর না দিয়ে তিনি সাক্ষ্য দেওয়া থেকে বিরত থাকেন। এতে মামলার স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়।

তাই কেন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর একটি নোটিশ পাঠান আদালত। গত ২৬ জানুয়ারি এ নোটিশ পাঠানোর পর মামলার নির্ধারিত দিনে আজ হাজির হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন ওসি। ওসি রওশন আলীর জরিমানার এক টাকা দুপুরেই সোনালী ব্যাংকের স্থানীয় শাখায় জমা দেওয়া হয়।