‘আমাকে মেরে ফেলবে, বাঁচান’ জানিয়ে ৯৯৯-এ কল বন কর্মচারীর

জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার উড়িরচর ইউনিয়নের পূর্বচর উপকূলীয় বন বিটের এক কর্মচারী নিজেকে জীবিত উদ্ধারের আকুতি জানিয়ে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করেছেন। আজ শনিবার সকাল ৯টার দিকে তিনি কল করেন। বলেন, ‘আমাকে মেরে ফেলবে, বাঁচান।’ ফোন পেয়ে সন্দ্বীপ উপজেলার উড়িরচর পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) শেখ আবদুল বাতেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

ওই কর্মচারীর নাম স্বপন দাস। তিনি উপকূলীয় বন বিভাগের নৌকাচালক (বিএম) হিসেবে কর্মরত আছেন। গত ১৭ ডিসেম্বর মহেশখালী থেকে বদলি হয়ে সন্দ্বীপের উড়িরচরে যোগ দেন তিনি। এরপর সন্দীপের উড়িরচরে তাঁর বিটে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রোষানলে পড়েছেন বলে দাবি স্বপনের।

স্বপন দাস মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। তাঁকে যেকোনো সময় মেরে ফেলা হতে পারে। কিন্তু কী কারণে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে বা তাঁকে কেন মেরে ফেলা হবে, সে বিষয়ে তিনি স্পষ্ট কিছু বলতে চাননি।

এ বিষয়ে জানতে বিট কার্যালয়ের বিট কর্মকর্তা মনজুর মোর্শেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, স্বপন দাসের মানসিক সমস্যা আছে। সে জন্য তিনি এ ধরনের আচরণ করছেন। তাঁকে বাড়িতে চলে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে, এমনকি তাঁকে ঘাটে পৌঁছে দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু স্বপন দাস তাঁদের সঙ্গে বিট অফিস ছেড়ে যেতে চাননি।

এ বিষয়ে স্বপন দাসকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, তাঁকে বিট কার্যালয় থেকে নিয়ে গিয়ে মেরে ফেলা হতে পারে। সে জন্য তিনি যাচ্ছেন না। তাঁকে পুলিশ নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে গেলে তিনি বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে যেতে রাজি আছেন। তাঁর দাবি, এর আগে উড়িরচর বিটে মুকাদ্দেস নামের এক কর্মচারীকে এভাবে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু তিনি আর ফেরেননি। তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য। তাঁর ক্ষেত্রেও এমন হতে পারে মনে করেন তিনি আতঙ্কিত।

৯৯৯-এ কল পেয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়া এএসআই শেখ আবদুল বাতেন প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে যেটুকু জেনেছেন বিট কর্মকর্তা মনজুর মুরশেদ নৌকাচালক স্বপন দাসকে মানসিক নির্যাতন চালিয়েছেন দুই মাস ধরে। তাঁকে অন্য কর্মীদের থেকে আলাদা ও একঘরে করে রেখেছেন। বিষয়টি বন বিভাগের অভ্যন্তরীণ বিষয় হলেও সরকারি কর্মচারীর জীবনের নিরাপত্তার ব্যাপার পুলিশকে দেখতে হচ্ছে। এ বিষয়ে আরও তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।