আ.লীগের প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আ.লীগের মেয়র প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্পে ককটেল হামলার অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ মাহমুদুল হক ভূঁইয়ার সমর্থকেরা এই ককটেল হামলা করেছেন বলে ছাত্রলীগের অভিযোগ। জেলা শহরের দক্ষিণ মৌড়াইল থেকে তোলা ছবি
ছবি: প্রথম আলো

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্পে ককটেল হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর সভায় বাধা দেওয়ারও পাল্টা অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলা শহরের দক্ষিণ মৌড়াইলে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নৌকার নির্বাচনী ক্যাম্পে ককটেল হামলা এবং একই এলাকায় বালুর মাঠে বিদ্রোহী প্রার্থীর সভায় বাধা দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।  

স্থানীয় থানা-পুলিশ বলছে, নৌকার প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্পে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’র সভায় বাধা দেওয়া হয়নি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও বর্তমান পৌর মেয়র নায়ার কবির দ্বিতীয়বার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। আর দলের মনোনয়ন না পেয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদুল হক ভূঁইয়া মেয়র পদে ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১৪ ফেব্রুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্যপদ থেকে মাহমুদুল হককে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। পাশাপাশি দলের প্রাথমিক সদস্যপদ এবং সাংগঠনিক পদ থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে চিঠি পাঠায় জেলা আওয়ামী লীগ। ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রহিম বলেন, ‘মাহমুদুল হক ভূঁইয়ার সভায় বাধা দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। তিনি এলাকায় গণসংযোগ করে চলে গেছেন। নৌকার প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্পে ককটেল হামলা চালানো হয়েছে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে একটি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ককটেল বিস্ফোরণ ও সভায় বাধা দেওয়ার বিষয়ে দুই প্রার্থীর সমর্থকেরাই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেন। তাঁরা বলেন, জেলা শহরের দক্ষিণ মৌড়াইল এলাকার বালুর মাঠে বৃহস্পতিবার বিকেলে মাহমুদুল হক ভূঁইয়ার সভা হওয়ার কথা ছিল। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সেখানে সভা করতে বাধা দেন। ছাত্রলীগের বাধার মুখে মাহমুদুল হক ভূঁইয়া নির্ধারিত সভা বাতিল করেন। এরপর তিনি তাঁর সমর্থকদের নিয়ে এলাকায় গণসংযোগ করেন। একই সময় ওই এলাকায় নায়ার কবিরের নির্বাচনী ক্যাম্পে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের একাধিক ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে পৌঁছান।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী নায়ার কবির প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি শুনে পুলিশকে অবহিত করেছি। আমার সমর্থকেরা সেখানে ছিলেন। আর বিষয়টি আমি রিটার্নিং কর্মকর্তাকে লিখিতভাবেও জানাব।’

এ বিষয়ে মাহমুদুল হক ভূঁইয়া বলেন, প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে তিনি বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে দক্ষিণ মৌড়াইলের বালুর মাঠে সভা আহ্বান করেছিলেন। সভা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেলের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সেখানে গিয়ে তাঁর সমর্থকদের সভা করতে বাধা দেন। নায়ার কবিরের নির্বাচনী ক্যাম্পে ককটেল বিস্ফোরণের বিষয়ে তিনি বলেন, তাঁকে বেকায়দায় ফেলতে মেয়র নায়ার কবিরের সমর্থকেরাই নিজেদের ক্যাম্পে ককটেল বিস্ফোরণ করেছেন। এটি তাঁদের একটি ষড়যন্ত্র।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রবিউল হোসেন রুবেল প্রথম আলোকে বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্পের সামান্য দূরেই বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী মাহমুদুল হক ভূঁইয়ার সভা আহ্বান করা হয়। সভা শুরুর আগে মাহমুদুল হক ভূঁইয়ার সমর্থকেরা নৌকার মেয়র প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্পে ককটেল হামলা করেন। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়া হবে।