ইজিবাইক ছিনতাইয়ের জন্য নাকে-মুখে কাদা ঢুকিয়ে চালককে হত্যা করা হয়: পুলিশ

নাটোরের লালপুর উপজেলায় ইজিবাইকচালক খোরশেদ আলমকে হত্যার অভিযোগে চার তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে সজিব হোসেন (১৯) নামের এক তরুণ আজ মঙ্গলবার নাটোর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে ওই ইজিবাইকের হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। আজ দুপুরে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা।

গ্রেপ্তার সজিব হোসেনের বাড়ি নাটোরের লালপুর উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে। গ্রেপ্তার অন্য তিনজন হলেন সদর উপজেলার কাপপুরিয়া গ্রামের মেহেদী হাসান, দস্তানাবাদ গ্রামের সাগর আলী ও লালপুর উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের রবিউল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার একটি লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান। সেখানে তিনি বলেন, ১৪ মে রাতে বড়াইগ্রামের মহিষভাঙ্গা গ্রামের ফখরুল ইসলামের ছেলে খোরশেদ আলম (৩২) ভাড়ায় চালানোর জন্য নতুন ইজিবাইক নিয়ে বের হন। ওই রাতে তিনি আর ফেরেননি। পরদিন সন্ধ্যায় লালপুর উপজেলার চাঁনপুর গ্রামের রাস্তার পাশের আখখেতে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। ওই দিনই তাঁর বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে লালপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, লাশ উদ্ধারের পর পুলিশের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক তদন্ত দল গঠন করা হয় এবং তদন্ত দলের সদস্যদের মাঠে নামানো হয়।

তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সজিব হোসেনকে সোমবার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। পরে তাঁকে নাটোরের একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হাজির করা হয়। তিনি সেখানে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জবানবন্দিতে সজিব হোসেন বলেন, তিনিসহ তাঁর বন্ধু মেহেদী হাসান, রবিউল ইসলাম ও অজ্ঞাতনামা অপর একজন খোরশেদের নতুন ইজিবাইকটি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী তাঁরা ২৫০ টাকা ভাড়ায় খোরশেদকে লালপুরের চাঁনপুরে নিয়ে যান। সেখানে ফাঁকা রাস্তায় তাঁকে গাড়ি থেকে নামিয়ে আখখেতের মধ্যে নিয়ে যান এবং নাকে–মুখে কাদা ঢুকিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে ইজিবাইকটি সদর উপজেলার দস্তানাবাদ গ্রামের সাগর আলীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় সাগরকেও গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রবিউল ইসলাম ও মেহেদী হাসানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেপ্তার করা চক্রটি রাস্তায় ইজিবাইকগুলো পর্যবেক্ষণ করে এবং নতুন ইজিবাইক ছিনতাইয়ের লক্ষ্য স্থির করে। পরে পরিকল্পিতভাবে লক্ষ্য বাস্তবায়ন করে। এ জন্য তারা চালককে হত্যা করতেও দ্বিধাবোধ করেনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বড়াইগ্রাম সার্কেল) শরীফ আল রাজীব, লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনোয়ারুজ্জামান প্রমুখ।