একই রশিতে ঝুলছিল মা-মেয়ের লাশ
যশোরের মনিরামপুর উপজেলা থেকে এক গৃহবধূ এবং তাঁর তিন বছরের কন্যাশিশুর লাশ একই রশির দুই প্রান্তে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার কুলটিয়া গ্রামের ফাল্গুন মণ্ডলের বাড়ি থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়।
ওই গৃহবধূর নাম পিয়া মণ্ডল (২২)। তাঁর মেয়ের নাম অদৃতা মণ্ডল (৩)। পিয়া মণ্ডল মনিরামপুর উপজেলার সুজাতপুর গ্রামের কনার মণ্ডলের স্ত্রী। কনার মণ্ডল মশিয়াহাটি ডিগ্রি কলেজের সমাজ বিজ্ঞানের প্রভাষক। উপজেলার কুলটিয়া গ্রামে। তিনি স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ কনার মণ্ডলকে আটক করেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, উপজেলার কুলটিয়া গ্রামের কনার মণ্ডলের ভাড়া বাড়ির রান্নাঘরের সিলিংয়ে কিছুটা ঝুলে থাকা লোহার রয়েছে। শনিবার বিকেলে ওই রডে একটি লম্বা রশি প্যাঁচানো অবস্থায় ছিল। রশির এক প্রান্তে মা পিয়া মণ্ডল এবং অন্য প্রান্তে মেয়ে অদৃতা মণ্ডলের লাশ ঝুলছিল। কনার মণ্ডল এ সময় বাড়িতে ছিলেন না। প্রতিবেশীরা জানালা দিয়ে লাশ দুটি ঝুলতে দেখে পুলিশে খবর দেন। সন্ধ্যায় মনিরামপুর থানা থেকে পুলিশ গিয়ে লাশ দুটি উদ্ধার করে। রাত আটটার দিকে পুলিশ মরদেহ দুটি থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ এ সময় কনার মণ্ডলকে আটক করে।
পিয়া মণ্ডলের ভাই চন্দন মণ্ডল বলেন, চার বছর আগে মনিরামপুর উপজেলার সুজাতপুর গ্রামের ননী গোপাল মণ্ডলের ছেলে কনার মণ্ডলের সঙ্গে অভয়নগর উপজেলার দত্তগাতী গ্রামের ভগীরথ মণ্ডলের মেয়ে পিয়া মণ্ডলের বিয়ে হয়। কনার মণ্ডলের সঙ্গে একাধিক মেয়ের সম্পর্ক রয়েছে। বিষয়টি তাঁর বোন পিয়া মণ্ডল জানতেন। এর প্রতিবাদ করায় প্রায় দেড় বছর ধরে মাঝেমধ্যে তিনি তাঁর বোনকে মারধর করতেন। পিয়া পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। আজ কনার মণ্ডল তাঁর বোন ও বোনের মেয়েকে হত্যা করে গলায় রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে চাচ্ছেন।
মনিরামপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শিকদার মতিয়ার রহমান বলেন, পিয়া ও তাঁর মেয়ের লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। আগামীকাল রোববার ময়নাতদন্তের জন্য লাশ দুটি যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।
মনিরামপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আশিক সুজয় মামুন বলেন, পিয়া মণ্ডলের পরিবারের সদস্যদের থানায় আসতে বলা হয়েছে। তাঁরা যেভাবে অভিযোগ দেবেন, সেভাবে মামলা হবে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কনার মণ্ডলকে আটক করা হয়েছে।