এবার আ.লীগের দুই নেতাকে মারধর করলেন বদি

ছবিতে মেঝেতে পড়ে আছেন একজন। তাঁর মাথার পাশে বসা অবস্থায় দেখা যাচ্ছে সাবেক সাংসদ বদিকে। বদির ছোট ভাই শুক্কুরকে নিচে পড়ে থাকা ব্যক্তিকে লাথি মারতে দেখা যাচ্ছে
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

দলীয় বৈঠকে কক্সবাজারের টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের দুজন নেতাকে সরকারদলীয় সাবেক সাংসদ আবদুর রহমান বদি মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় এ ঘটনা ঘটে।

আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে মারধরের এ অভিযোগ তুলেছেন টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোহাম্মদ ইউছুফ ও পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউছুফ ভুট্টো। তাঁরা দুজন শ্যালক-ভগ্নিপতি। এর মধ্যে মোহাম্মদ ইউছুফ সাবেক সাংসদ আবদুর রহমানের মামাতো ভাই। এ দুজন অভিযোগ করেছেন, বর্ধিত সভায় আবদুর রহমানের একটি বক্তব্যের বিরোধিতা করলে খেপে গিয়ে মঞ্চ থেকে নেমে তাঁদের মারধর করেন তিনি। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আবদুর রহমান বলেন, মঞ্চ থেকে নেমে এসে ‘হাতাহাতি’তে বাধা দিয়েছেন তিনি।

মারধরের শিকার মোহাম্মদ ইউছুফ প্রথম আলোকে বলেন, বর্ধিত সভা চলাকালীন আবদুর রহমান পৌর কমিটিকে বাদ দিয়ে বারবার ওয়ার্ড কমিটিকে প্রাধান্য দিয়ে কথা বলছিলেন। আবদুর রহমানের বক্তব্যের প্রতিবাদ করায় সেখানে বাগ্‌বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে আবদুর রহমান মঞ্চ থেকে নেমে আসেন। তিনি বলেন, ‘সভায় থাকা বদির ছোট ভাই ও পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস শুক্কুরসহ কয়েকজন অনুসারী সরাসরি এসে আমাকে কিলঘুষি ও লাথি মারতে থাকেন। তাঁরা আমার পাঞ্জাবি ছিঁড়ে ফেলেন। এ সময় আমাকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ ইউছুফ ভুট্টোকেও মারধর করেন বদি ও তাঁর অনুসারীরা। এ ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুল হকের মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন বদির অনুসারীরা।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন মিলে একজনকে কিলঘুষি ও লাথি মারছেন। সেখানে আবদুর রহমানকেও দেখা গেছে।

টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশর বলেন, টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের কমিটি হয়েছে ৯ বছর আগে। আর ওই কমিটির অধীনে নয়টি ওয়ার্ডের কমিটি হয়েছে দুই বছর আগে। ওয়ার্ড কমিটিগুলোর একটিও পূর্ণাঙ্গ হয়নি। বর্ধিত সভায় নতুন সম্মেলনের দাবি উঠেছে। এতে খেপে গিয়ে আবদুর রহমান, তাঁর ভাই শুক্কুরসহ তাঁদের অনুসারীরা দুজন নেতাকে মারধর করেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে আবদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি মঞ্চে ছিলাম। মোহাম্মদ ইউছুফ মনোর সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডার সৃষ্টি হলেও পরে সবকিছু ঠিক হয়ে যায়। হাতাহাতি ও লাথালাথির ঘটনাটি দেখে আমি মঞ্চ থেকে নেমে এসে বাধা দিয়েছি। এখন আমার নামেই দুর্নাম ছড়ানো হচ্ছে।’

সাবেক সাংসদ আবদুর রহমানের হাতে কারও লাঞ্ছিত বা মারধরের শিকার হওয়ার অভিযোগ নতুন নয়। এর আগেও নির্বাচন কর্মকর্তা, ব্যাংকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, বন কর্মকর্তা, প্রকৌশলী, আইনজীবী, ম্যাজিস্ট্রেট, দলীয় নেতা, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষকে মারধর করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।