কমলগঞ্জে দিনব্যাপী মণিপুরি ভাষা ও সংস্কৃতি উৎসব

কমলগঞ্জে শুক্রবার সকালে জাতীয় পতাকা ও সংগঠনের পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে উদ্বোধন করা হয় দিনব্যাপী মণিপুরি ভাষা ও সংস্কৃতি উৎসব
ছবি: প্রথম আলো

মাতৃভাষা বিকশিত করার প্রয়াসে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে মণিপুরি ভাষা ও সংস্কৃতি উৎসব–২০২২ উদ্‌যাপিত হয়েছে। আজ শুক্রবার কমলগঞ্জের আদমপুরে তেতেইগাঁওয়ের রমিদ উদ্দীন উচ্চবিদ্যালয়ে ‍‍এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ মণিপুরি সাহিত্য সংসদ।

আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কবি ও লেখক এ কে শেরাম ও তেতেইগাঁও রমিদ উদ্দীন উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহেনা বেগম উৎসবের উদ্বোধন করেন। এরপর মৈতৈ মণিপুরি ও মুসলিম মণিপুরি (পাঙাল) শিক্ষার্থী ও অতিথিদের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। পরে তেতইগাঁও রমিদ উদ্দীন উচ্চবিদ্যালয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।

দুপুরে মৈতৈ মণিপুরি মাতৃভাষার বর্ণমালায় দুই শতাধিক মৈতৈ মণিপুরি ও মুসলিম মণিপুরি শিক্ষার্থীরা মেধা পরীক্ষায় অংশ নেয়। এরপর বেলা ৩টায় বিদ্যালয়ের মিলনায়তনে মণিপুরি ভাষা ও সংস্কৃতির চর্চা ও প্রসারবিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন এ কে শেরাম।

আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সৌরভ সিকদার, জাবারাং কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা এবং আন্তর্জাতিক আদিবাসী ভাষা দশক উদ্‌যাপন জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব ও উন্নয়নকর্মী বাঁধন আরেং।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন মণিপুরি সাহিত্য পরিষদের সদস্যসচিব নামব্রম সংকর, অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক এজিএম নীলচাঁদ সিংহ, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহেনা বেগম, প্রধান শিক্ষক ও লেখক সাজ্জাদুল হক স্বপন, কবি রওশন আরা বাঁশি, কামাল উদ্দীন প্রমুখ।

মাতৃভাষার বর্ণমালা ব্যবহার করে নিজের ভাষা ও সংস্কৃতি বিকশিত করার লক্ষ্যে ১৩ বছর ধরে এ উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মণিপুরি সাহিত্য সংসদের সভাপতি এ কে শেরাম। তিনি বলেন, মণিপুরি বিশেষত মৈতৈ মণিপুরিদের মাতৃভাষার নিজস্ব বর্ণমালা রয়েছে। এ বর্ণমালা ব্যবহার করে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মণিপুরি ভাষা ও সংস্কৃতির চর্চা করবে। এ জন্য মণিপুরি ভাষা সংরক্ষণের সঙ্গে সঙ্গে সঠিকভাবে মণিপুরি সংস্কৃতি বিকশিত করতে হবে। তাহলে এ ভাষা বিলুপ্ত হওয়ার ভয় থাকবে না।

এ কে শেরাম আরও বলেন, ২০০৮ সাল থেকে এ উৎসব উদ্‌যাপন করা হচ্ছে। এবারের উৎসব চূড়ান্ত পর্যায়ে বিভিন্ন শ্রেণির মণিপুরি শিক্ষার্থীরা নিজেদের বর্ণমালা ব্যবহার করে মেধা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। পরীক্ষা শেষে তাদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। সবশেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।