করোনায় এখনো মৃত্যুহীন হাওরবেষ্টিত অষ্টগ্রাম

করোনাভাইরাস
প্রতীকী ছবি

দেশে কোভিড-১৯–এর (করোনাভাইরাস) নানা ধরন ছড়ালেও আজ শুক্রবার পর্যন্ত এতে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলায়। হাওরবেষ্টিত উপজেলাটিতে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যাও দেড় শর নিচে।

অষ্টগ্রামে করোনার মোট শনাক্তের সংখ্যা ১৩৪। তবে উপজেলাটিতে করোনার এমন চিত্র নিয়ে মিশ্র আলোচনা আছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে। কারও মতে, উপজেলায় সেভাবে সংক্রমণ ছড়ায়নি। আবার কেউ বলছেন, নমুনা সংগ্রহ কম হওয়ায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা বোঝা যাচ্ছে না।

সর্বশেষ আদমশুমারি অনুযায়ী অষ্টগ্রামের জনসংখ্যা ১ লাখ ৬৩ হাজার। উপজেলার কলমা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাধাকৃষ্ণ দাস বলছেন, নতুন ধরন অমিক্রন সম্পর্কেও তাঁর ইউনিয়নের বাসিন্দারা খুব একটা জানেন না। হাওরের লোকজন সংগ্রাম করে বাঁচেন। রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও বেশি।

অষ্টগ্রামের পার্শ্ববর্তী আরও দুই উপজেলা মিঠামইন ও ইটনাতেও মৃত্যুর সংখ্যা কম। এ পর্যন্ত মিঠামইনে এক ও ইটনায় দুজন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। দুই উপজেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ১২৯ ও ১০৮। কিশোরগঞ্জের ১৩ উপজেলা মিলিয়ে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ২১৫।

অষ্টগ্রামে এখন পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ হাজার ১২০ জনের। গত এক সপ্তাহে ১৬ জনের নমুনা সংগ্রহ হয়েছে। তাঁদের মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছেন তিনজনের।

সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলায় করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১২ হাজার ৬৭৯। মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ২২৩ জনের। আক্রান্তের হার ১০ দশমিক শূন্য ৪।

জেলায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত সদর উপজেলায় ৫ হাজার ৩৫৮ জন। আর সবচেয়ে কম আক্রান্ত ও মৃত্যু জেলার তিন হাওর উপজেলায়।

অষ্টগ্রামে এখন পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ হাজার ১২০ জনের। গত এক সপ্তাহে ১৬ জনের নমুনা সংগ্রহ হয়েছে। তাঁদের মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছেন তিনজনের।

তবে অষ্টগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলছেন, হাওর এলাকার বাসিন্দারা এখনো করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হালকাভাবে দেখছেন। নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েও করোনার উপসর্গ আছে, এমন ব্যক্তিদের হাসপাতালমুখী করা যায়নি।

বুলবুল আহমেদ বলেন, ঘরে ঘরে এখন সর্দি, জ্বর, কাশি। অথচ বেশির ভাগ মানুষের ধারণা শীত এলে এমন অসুখ হয়। তাই করোনা পরীক্ষার জন্য অনেকে নমুনা দিতে আগ্রহী না। এই অবস্থায় হাওরের এই উপজেলায় করোনার সার্বিক পরিস্থিতির সঠিক মূল্যায়ন করা কঠিন।